সর্বনিম্ন দামে সর্বাধিক ফিচার দেওয়ার মাধ্যমেই
২০,০০০ টাকার নিচের অ্যান্ড্রয়েড বাজারে নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে
ওয়াল্টন, সিম্ফোনি বা মাইক্রোম্যাক্স। এসব ব্র্যান্ডের ফোনের মূল
প্রাণশক্তি হচ্ছে মাত্র অল্প কয়টি চিপসেট, যেগুলো ব্যবহার করেই অনেক
মডেলের ফোন তারা বাজারে নিয়ে আসছে। সুতরাং এই রিভিউর উপর ভিত্তি করে
ইতোমধ্যেই বাজারে থাকা বেশ কিছু ডিভাইস এবং সামনে যেসব ফোন আসবে তাদের
পারফরম্যান্স কেমন হতে পারে তা সে ফোনের চিপসেট-মডেল মিলিয়ে অনুমান করা
সম্ভব।
মিডিয়াটেক চীনের অন্যতম বড় মাইক্রোচিপ ও মাল্টিমিডিয়া পণ্য ( টিভি ও ডিভিডি/ব্লু-রে প্লেয়ার ও হোম থিয়েটার) তৈরিকারক প্রতিষ্ঠান, যারা মোবাইলের সিস্টেম-অন-চিপের পাশাপাশি কম্পিউটারের ওয়াইফাই, ব্লুটুথ এসব আরএ লিঙ্ক নামে তৈরি করে থাকে। মিডিয়াটেকের অ্যান্ড্রয়েড ছাড়াও সাধারণ ফোনও রয়েছে, সেগুলোও আমাদের দেশের বিভিন্ন কোম্পানি বাজারজাত করছে। অন্যান্য চিপের তুলনায় মিডিয়াটেকের চিপ কম শক্তি ব্যয় করায় ব্যাটারি ব্যাকআপ ও বেশি পাওয়া যায় আবার ফোন গরমও কম হয়, যার কারণে এদের বাজার দিন কে দিন বেড়েই চলেছে।
অ্যান্ড্রয়েড ফোনের মধ্যে মিডিয়াটেকের প্রধানত ৩টি চিপ দেখা যায়, সামনে আরেকটি আসছে শীঘ্রই। সেগুলো হচ্ছে:
১. সিঙ্গল কোর MTK6575, যা সাধারণত ৫০০০ টাকার নিচের ফোনে বা ট্যাবে দেখা যায়;
২. ডুয়াল কোর MTK6577,MT6572, যা সাধারণত ৬-৯০০০ টাকার ফোনে বা ট্যাবে দেখা যায়;
৩. কোয়াড কোর MTK6589, 6589T, 8389,MT6582,MT6588 যা সাধারণত ১১০০০+ টাকার ফোনে বা ট্যাবে থাকে।
৪. অক্টা-কোর MTK6592
৫. মিডিয়াটেকের MT8xxx সিরিজ
এবার প্রতিটি চিপ নিয়ে বিস্তারিত।
- ১ গিগাহার্জ Cortex-A9 সিপিউ, ARM-v7 NEON (NEON হচ্ছে ভিডিও প্লেব্যাকের জন্যে)
- পাওয়ারভিয়ার ৫৩১ জিপিউ, সাধারণ সব গেম ও বেশ কিছু এইচডি মানের গেম খেলার উপযোগী।
- ৭২০পি ভিডিও প্লেব্যাক করার ক্ষমতা।
- সর্বোচ্চ ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা সেন্সর সাপোর্ট, ৪৮০পি ভিডিও রেকর্ড (যদিও এই চিপের ফোনে ৫ মেগাপিক্সেলের বেশি থাকে না)
- সর্বোচ্চ qHD মানের (৯৬০ x ৫৪০) ডিসপ্লে (যদিও HVGA , 480 x 800 মানের বেশি দেখা যায় না)
- 3D ভিডিও প্লেব্যাক সাপোর্ট, ফোনের ডিসপ্লের উপর নির্ভরশীল।
- ১৫০০-২০০০ mAh ব্যাটারিতে প্রায় ৫০০ ঘন্টা স্ট্যান্ডবাই, ৮ ঘন্টা ৩জি টক টাইম, এবং ৬ ঘন্টা ৩ডি গেমিং।
- এই চিপে সাধারণত ২৫৬-৫১২ মেগাবাইট র্যাম দেয়া হয়।
- অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন ২.৩ – ৪.০ এর উপযোগী করে তৈরি।
- AnTuTu বেঞ্চমার্ক সাধারণত ৩০০০-৪৫০০ হয়ে থাকে।
যা থাকছেঃ
- ১ গিগাহার্জ ডুয়াল-কোর Cortex-A9 ARM-v7 NEON প্রসেসর।
- পাওয়ারভিআর ৫৩১ জিপিউ, তবে ডুয়াল-কোর হওয়ায় প্রায় সব এইচডি গেম সাপোর্ট।
- ১০৮০পি ভিডিও প্লেব্যাক সাপোর্ট।
- ৮ মেগাপিক্সেল পর্যন্ত ক্যামেরা সাপোর্ট, ৭২০পি ভিডিও রেকর্ড।
- ৩ডি ভিডিও প্লেব্যাক সাপোর্ট, ফোনের ডিস্প্লের উপর নির্ভর শীল।
- সর্বোচ্চ qHD মানের (৯৬০ x ৫৪০) ডিসপ্লে (যদিও HVGA , 480 x 800 মানের বেশি দেখা যায় না)
- ১৫০০-২০০০ mAh ব্যাটারিতে প্রায় ৫০০ ঘন্টা স্ট্যান্ডবাই, ৮ ঘন্টা ৩জি টক টাইম, এবং ৪.৫ ঘন্টা ৩ডি গেমিং।
- এই চিপে সাধারণত ৫১২ মেগাবাইট – ১গিগাবাইট র্যাম দেয়া হয়।
- অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন ৪.০-৪.১ এর উপযোগী করে তৈরি।
- AnTuTu বেঞ্চমার্ক স্কোর সাধারণত ৬০০০-৭৮০০ হয়ে থাকে।
একই রকম ফিচার সমৃদ্ধ নতুন চিপ MT6572 বাজারে এসেছে, যাতে নতুন থাকছে:
- ১.৩ গিগাহার্য ডুয়াল-কোর Cortex-A7 ARM-v7 NEON প্রসেসর।
- মালি-৪০০ MP1 জিপিউ, যা আগের পাওয়ারভিআর ৫৩১ এর চেয়ে শক্তিশালী।
- অ্যান্ড্রয়েড ৪.২.২ উপোযোগী।
যা রয়েছে এই চিপেঃ
- ১.২ গিগাহার্জ কোয়াড-কোর Cortex-A7 ARM-v7 NEON প্রসেসর (A9 ব্যবহার হয়নি ব্যাটারি লাইফ বাড়াতে)।
- পাওয়ারভিআর ৫৪৪ জিপিউ, কোয়াড-কোর। এ সময়ের প্রায় সব এইচডি গেম সাপোর্ট, ২-৩ টা ছাড়া বাকি সব সর্বোচ্চ গ্রাফিক্সে খেলা যাবে।
- ১০৮০পি ভিডিও প্লেব্যাক সাপোর্ট।
- ১২ মেগাপিক্সেল পর্যন্ত ক্যামেরা সাপোর্ট, ১০৮০পি ভিডিও রেকর্ড।
- ৩ডি ভিডিও প্লেব্যাক সাপোর্ট, ফোনের ডিসপ্লের উপর নির্ভরশীল।
- ফুল HD মানের (১৯২০ x ১০৮০) ডিসপ্লে (যদিও qHD , ৯৬০ x ৫৪০ ও ৭২০পি, ১২৮০ x ৭২০ মানের বেশি দেখা যায় না)।
- ২৫০০-৩০০০ mAh ব্যাটারিতে প্রায় ৫০০ ঘন্টা স্ট্যান্ডবাই, ১০ ঘন্টা ৩জি টক টাইম, এবং ৬ ঘন্টা ৩ডি গেমিং।
- এই চিপে সাধারণত ১-২গিগাবাইট র্যাম দেয়া হয়।
- অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন ৪.১-৪.২ এর উপযোগী করে তৈরি, ভবিষ্যতে ৪.৩ ও চলার সম্ভাবনা প্রবল।
- AnTuTu বেঞ্চমার্ক স্কোর সাধারণত ১২০০০-১৪০০০ (8389T ১৫০০০+) হয়ে থাকে।
কিছু ফোনে MTK6589T প্রসেসর রয়েছে, ধরে নেওয়া হয় এটি ওভার ক্লক করা MTK6589ই।
এই চিপের নতুন দুটি সংস্করণ বাজারে এসেছে:
MT6582:
- ১.২ এর বদলে ১.৩ গিগাহার্য প্রসেসর।
- পাওয়ারভিয়ার ৫৪৪ এর বদলে মালি-৪০০ MP2 জিপিউ।
এছাড়া বাকি সব ফিচার অপরিবর্তিত।
MT6588
মূলত MTK6589T এর আধুনিক সংস্করণ, নতুন থাকছে:
- ১.৫ এর বদলে ১.৭ গিগাহার্য প্রসেসর।
- পাওয়ারভিয়ার ৫৪৪ এর বদলে মালি-৪৫০MP4 জিপিউ।
যা যা আছে এই চিপে:
- ১.৭ গিগাহার্য Cortex-A7 ARM-V7 NEON অক্টা-কোর প্রসেসর, যার সব সময় সব গুলো কোর সচল থাকবে।
- মালি-৪৫০ MP4 জিপিউ, কোয়াড-কোর। এ সময়ের প্রায় সব এইচডি গেম সাপোর্ট, সব গেম সর্বোচ্চ গ্রাফিক্সে খেলা যাবে।
- ১০৮০পি ভিডিও প্লেব্যাক সাপোর্ট।
- ১৩ মেগাপিক্সেল পর্যন্ত ক্যামেরা সাপোর্ট, ১০৮০পি ভিডিও রেকর্ড।
- ৩ডি ভিডিও প্লেব্যাক সাপোর্ট, ফোনের ডিসপ্লের উপর নির্ভরশীল।
- ফুল HD মানের (১৯২০ x ১০৮০) ডিসপ্লে (যদিও qHD , ৯৬০ x ৫৪০ ও ৭২০পি, ১২৮০ x ৭২০ মানের বেশি দেখা যায় না)।
- ২৫০০-৩০০০ mAh ব্যাটারিতে প্রায় ৪০০ ঘন্টা স্ট্যান্ডবাই, ৭ ঘন্টা ৩জি টক টাইম, এবং ৫ ঘন্টা ৩ডি গেমিং।
i) চিপের নামঃ MT8377
মূল চিপঃ MTK6577
পার্থক্যঃ ১০৮০পি ভিডিও প্লেব্যাক সাপোর্ট, ১০৮০ x ৭২০পি ডিসপ্লে সাপোর্ট।
ii) চিপের নামঃ MT8377
মূল চিপঃ MTK6577
পার্থক্যঃ সনি ব্রাভিয়া ইঞ্জিনের মত মিডিয়াটেকের মিরাভিশন ইঞ্জিন। ওয়াইফাই এর মাধ্যমে ডিসপ্লে (মিরাক্যাস্ট) সাপোর্ট।
একই চিপের তৈরি ফোন এবং ট্যাবে কাছাকাছি পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে। এসব চিপের যেটায় যেসব গেম বা সফটওয়্যার চলে সেই চিপের সব ফোন ও ট্যাবে সেগুলো চলবে। আর যে চিপ যে উপায়ে রুট হয় সে চিপের সব ফোন ও ট্যাব সে উপায় রুট করা যাবে। মিডিয়াটেকের চিপে সাধারণত ওটিজি সাপোর্ট থাকে না, কিছু ফোন ও ট্যাবে বিশেষ উপায় সেগুলো দেয়া হয়। মিডিয়াটেকের সব চিপের ড্রাইভার ও ফ্ল্যাশ টুল সাধারণত একই রকম হয়ে থাকে। তবে এক মডেলের চিপের কার্নেল অন্য মডেলে চলবে না।
বাজারে মিডিয়াটেকের চিপের উপর ভিত্তি করে তৈরি ফোনের অভাব নেই। তাই যদি নামী দামী ব্র্যান্ডের ফোন না হয় (ট্যাবের ক্ষেত্রেও, যদি সিম সাপোর্টেড হয়) তা হলে ধরে নেওয়া যেতে পারে সেটিও এগুলোরই কোনো একটি চিপের। যদি বলে না দেয়া থাকে তা হলেও খুব সহজেই CPU/RAM/DEVICE IDENTIFIER ইত্যাদি অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটলের মাধ্যমে জেনে নিতে পারবেন ফোন বা ট্যাবের চিপ কোনটি।
এই সুদীর্ঘ পোস্টটি ধৈর্য ধরে পড়ার জন্যে ধন্যবাদ। আশা করি মিডিয়াটেকের বিভিন্ন চিপসেট সম্পর্কে কিছুটা হলেও আলোকপাত করতে পেরেছি। আপনাদের মতামত এবং আরো কিছু তথ্য যেগুলো হয়ত বাদ পড়েছে সেসব জানিয়ে আমাদের এখানে মন্তব্য করতে ভুলবেন না।
মিডিয়াটেক চীনের অন্যতম বড় মাইক্রোচিপ ও মাল্টিমিডিয়া পণ্য ( টিভি ও ডিভিডি/ব্লু-রে প্লেয়ার ও হোম থিয়েটার) তৈরিকারক প্রতিষ্ঠান, যারা মোবাইলের সিস্টেম-অন-চিপের পাশাপাশি কম্পিউটারের ওয়াইফাই, ব্লুটুথ এসব আরএ লিঙ্ক নামে তৈরি করে থাকে। মিডিয়াটেকের অ্যান্ড্রয়েড ছাড়াও সাধারণ ফোনও রয়েছে, সেগুলোও আমাদের দেশের বিভিন্ন কোম্পানি বাজারজাত করছে। অন্যান্য চিপের তুলনায় মিডিয়াটেকের চিপ কম শক্তি ব্যয় করায় ব্যাটারি ব্যাকআপ ও বেশি পাওয়া যায় আবার ফোন গরমও কম হয়, যার কারণে এদের বাজার দিন কে দিন বেড়েই চলেছে।
অ্যান্ড্রয়েড ফোনের মধ্যে মিডিয়াটেকের প্রধানত ৩টি চিপ দেখা যায়, সামনে আরেকটি আসছে শীঘ্রই। সেগুলো হচ্ছে:
১. সিঙ্গল কোর MTK6575, যা সাধারণত ৫০০০ টাকার নিচের ফোনে বা ট্যাবে দেখা যায়;
২. ডুয়াল কোর MTK6577,MT6572, যা সাধারণত ৬-৯০০০ টাকার ফোনে বা ট্যাবে দেখা যায়;
৩. কোয়াড কোর MTK6589, 6589T, 8389,MT6582,MT6588 যা সাধারণত ১১০০০+ টাকার ফোনে বা ট্যাবে থাকে।
৪. অক্টা-কোর MTK6592
৫. মিডিয়াটেকের MT8xxx সিরিজ
এবার প্রতিটি চিপ নিয়ে বিস্তারিত।
১. সিঙ্গল কোর MTK6575
এমটিকে ৬৫৭৫ চিপ তৈরি করা হয়েছে সবচেয়ে কম দামের মধ্যে যত দূর সম্ভব সর্বাধুনিক প্রযুক্তি দেওয়ার জন্যে। এতে যা থাকছেঃ- ১ গিগাহার্জ Cortex-A9 সিপিউ, ARM-v7 NEON (NEON হচ্ছে ভিডিও প্লেব্যাকের জন্যে)
- পাওয়ারভিয়ার ৫৩১ জিপিউ, সাধারণ সব গেম ও বেশ কিছু এইচডি মানের গেম খেলার উপযোগী।
- ৭২০পি ভিডিও প্লেব্যাক করার ক্ষমতা।
- সর্বোচ্চ ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা সেন্সর সাপোর্ট, ৪৮০পি ভিডিও রেকর্ড (যদিও এই চিপের ফোনে ৫ মেগাপিক্সেলের বেশি থাকে না)
- সর্বোচ্চ qHD মানের (৯৬০ x ৫৪০) ডিসপ্লে (যদিও HVGA , 480 x 800 মানের বেশি দেখা যায় না)
- 3D ভিডিও প্লেব্যাক সাপোর্ট, ফোনের ডিসপ্লের উপর নির্ভরশীল।
- ১৫০০-২০০০ mAh ব্যাটারিতে প্রায় ৫০০ ঘন্টা স্ট্যান্ডবাই, ৮ ঘন্টা ৩জি টক টাইম, এবং ৬ ঘন্টা ৩ডি গেমিং।
- এই চিপে সাধারণত ২৫৬-৫১২ মেগাবাইট র্যাম দেয়া হয়।
- অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন ২.৩ – ৪.০ এর উপযোগী করে তৈরি।
- AnTuTu বেঞ্চমার্ক সাধারণত ৩০০০-৪৫০০ হয়ে থাকে।
২. ডুয়াল কোর MTK6577
মিডিয়াটেক এই চিপটি তৈরি করে ৬৫৭৫ চিপের পরবর্তী সংস্করণ হিসেবে। এটি ৬৫৭৫এর চেয়ে ৪০% বেশি শক্তিশালী। এই চিপের লক্ষ্য বাজেটের ভেতর যত দূর সম্ভব ব্যবহারকারীকে সর্বাধুনিক স্মার্টফোনের স্বাদ দেয়া।যা থাকছেঃ
- ১ গিগাহার্জ ডুয়াল-কোর Cortex-A9 ARM-v7 NEON প্রসেসর।
- পাওয়ারভিআর ৫৩১ জিপিউ, তবে ডুয়াল-কোর হওয়ায় প্রায় সব এইচডি গেম সাপোর্ট।
- ১০৮০পি ভিডিও প্লেব্যাক সাপোর্ট।
- ৮ মেগাপিক্সেল পর্যন্ত ক্যামেরা সাপোর্ট, ৭২০পি ভিডিও রেকর্ড।
- ৩ডি ভিডিও প্লেব্যাক সাপোর্ট, ফোনের ডিস্প্লের উপর নির্ভর শীল।
- সর্বোচ্চ qHD মানের (৯৬০ x ৫৪০) ডিসপ্লে (যদিও HVGA , 480 x 800 মানের বেশি দেখা যায় না)
- ১৫০০-২০০০ mAh ব্যাটারিতে প্রায় ৫০০ ঘন্টা স্ট্যান্ডবাই, ৮ ঘন্টা ৩জি টক টাইম, এবং ৪.৫ ঘন্টা ৩ডি গেমিং।
- এই চিপে সাধারণত ৫১২ মেগাবাইট – ১গিগাবাইট র্যাম দেয়া হয়।
- অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন ৪.০-৪.১ এর উপযোগী করে তৈরি।
- AnTuTu বেঞ্চমার্ক স্কোর সাধারণত ৬০০০-৭৮০০ হয়ে থাকে।
একই রকম ফিচার সমৃদ্ধ নতুন চিপ MT6572 বাজারে এসেছে, যাতে নতুন থাকছে:
- ১.৩ গিগাহার্য ডুয়াল-কোর Cortex-A7 ARM-v7 NEON প্রসেসর।
- মালি-৪০০ MP1 জিপিউ, যা আগের পাওয়ারভিআর ৫৩১ এর চেয়ে শক্তিশালী।
- অ্যান্ড্রয়েড ৪.২.২ উপোযোগী।
৩. কোয়াড কোর MTK6589/T
মিডিয়াটেক এই চিপটি তৈরি করে পৃথিবীর সবচেয়ে কমদামে কোয়াড-কোর সিস্টেম অন চিপ তৈরির লক্ষ্যে। ২৮ ন্যানোমিটার ট্রানজিস্টরের এই চিপ তুলনামূলক কম দামে ২০১১-১২ সালের সেরা অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের সমান পারফরম্যান্স দিতে সক্ষম।যা রয়েছে এই চিপেঃ
- ১.২ গিগাহার্জ কোয়াড-কোর Cortex-A7 ARM-v7 NEON প্রসেসর (A9 ব্যবহার হয়নি ব্যাটারি লাইফ বাড়াতে)।
- পাওয়ারভিআর ৫৪৪ জিপিউ, কোয়াড-কোর। এ সময়ের প্রায় সব এইচডি গেম সাপোর্ট, ২-৩ টা ছাড়া বাকি সব সর্বোচ্চ গ্রাফিক্সে খেলা যাবে।
- ১০৮০পি ভিডিও প্লেব্যাক সাপোর্ট।
- ১২ মেগাপিক্সেল পর্যন্ত ক্যামেরা সাপোর্ট, ১০৮০পি ভিডিও রেকর্ড।
- ৩ডি ভিডিও প্লেব্যাক সাপোর্ট, ফোনের ডিসপ্লের উপর নির্ভরশীল।
- ফুল HD মানের (১৯২০ x ১০৮০) ডিসপ্লে (যদিও qHD , ৯৬০ x ৫৪০ ও ৭২০পি, ১২৮০ x ৭২০ মানের বেশি দেখা যায় না)।
- ২৫০০-৩০০০ mAh ব্যাটারিতে প্রায় ৫০০ ঘন্টা স্ট্যান্ডবাই, ১০ ঘন্টা ৩জি টক টাইম, এবং ৬ ঘন্টা ৩ডি গেমিং।
- এই চিপে সাধারণত ১-২গিগাবাইট র্যাম দেয়া হয়।
- অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন ৪.১-৪.২ এর উপযোগী করে তৈরি, ভবিষ্যতে ৪.৩ ও চলার সম্ভাবনা প্রবল।
- AnTuTu বেঞ্চমার্ক স্কোর সাধারণত ১২০০০-১৪০০০ (8389T ১৫০০০+) হয়ে থাকে।
কিছু ফোনে MTK6589T প্রসেসর রয়েছে, ধরে নেওয়া হয় এটি ওভার ক্লক করা MTK6589ই।
এই চিপের নতুন দুটি সংস্করণ বাজারে এসেছে:
MT6582:
- ১.২ এর বদলে ১.৩ গিগাহার্য প্রসেসর।
- পাওয়ারভিয়ার ৫৪৪ এর বদলে মালি-৪০০ MP2 জিপিউ।
এছাড়া বাকি সব ফিচার অপরিবর্তিত।
MT6588
মূলত MTK6589T এর আধুনিক সংস্করণ, নতুন থাকছে:
- ১.৫ এর বদলে ১.৭ গিগাহার্য প্রসেসর।
- পাওয়ারভিয়ার ৫৪৪ এর বদলে মালি-৪৫০MP4 জিপিউ।
৪. অক্টা কোর MT6592
সর্বপ্রথম মোবাইল অক্টা-কোর প্রসেসর তৈরি করে স্যামসাং সারা ফেলে দিলেও আমরা পরে জানতে পেরেছি সেটি আসলে একটি Cortex-A15 কোয়াড-কোর ও একটি কোয়াড-কোর Cortex-A7 চিপের সংমিশ্রন, অর্থাৎ একই সাথে ৮টি কোর সচল থাকছেনা। মিডিয়াটেক তাই এই চিপ টি তৈরি করে প্রথম সত্যিকারের অক্টা-কোর চিপ হিসেবে, যাতে ৮টি কোরই সব সময় সচল থাকে।যা যা আছে এই চিপে:
- ১.৭ গিগাহার্য Cortex-A7 ARM-V7 NEON অক্টা-কোর প্রসেসর, যার সব সময় সব গুলো কোর সচল থাকবে।
- মালি-৪৫০ MP4 জিপিউ, কোয়াড-কোর। এ সময়ের প্রায় সব এইচডি গেম সাপোর্ট, সব গেম সর্বোচ্চ গ্রাফিক্সে খেলা যাবে।
- ১০৮০পি ভিডিও প্লেব্যাক সাপোর্ট।
- ১৩ মেগাপিক্সেল পর্যন্ত ক্যামেরা সাপোর্ট, ১০৮০পি ভিডিও রেকর্ড।
- ৩ডি ভিডিও প্লেব্যাক সাপোর্ট, ফোনের ডিসপ্লের উপর নির্ভরশীল।
- ফুল HD মানের (১৯২০ x ১০৮০) ডিসপ্লে (যদিও qHD , ৯৬০ x ৫৪০ ও ৭২০পি, ১২৮০ x ৭২০ মানের বেশি দেখা যায় না)।
- ২৫০০-৩০০০ mAh ব্যাটারিতে প্রায় ৪০০ ঘন্টা স্ট্যান্ডবাই, ৭ ঘন্টা ৩জি টক টাইম, এবং ৫ ঘন্টা ৩ডি গেমিং।
৫. মিডিয়াটেকের MT8xxx সিরিজ
মিডিয়াটেকের ৬৫xx সিরিজ ছাড়াও ট্যাবলেটের জন্যে তৈরি ৮xxx সিরিজ রয়েছে। এগুলো মূলত ৬৫xx সিরিজের মতই, শুধু ট্যাবের কারণে এতে অল্প কিছু নতুন ফিচার যোগ করা হয়েছে। সেগুলো নিচে দেয়া হলো।i) চিপের নামঃ MT8377
মূল চিপঃ MTK6577
পার্থক্যঃ ১০৮০পি ভিডিও প্লেব্যাক সাপোর্ট, ১০৮০ x ৭২০পি ডিসপ্লে সাপোর্ট।
ii) চিপের নামঃ MT8377
মূল চিপঃ MTK6577
পার্থক্যঃ সনি ব্রাভিয়া ইঞ্জিনের মত মিডিয়াটেকের মিরাভিশন ইঞ্জিন। ওয়াইফাই এর মাধ্যমে ডিসপ্লে (মিরাক্যাস্ট) সাপোর্ট।
একই চিপের তৈরি ফোন এবং ট্যাবে কাছাকাছি পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে। এসব চিপের যেটায় যেসব গেম বা সফটওয়্যার চলে সেই চিপের সব ফোন ও ট্যাবে সেগুলো চলবে। আর যে চিপ যে উপায়ে রুট হয় সে চিপের সব ফোন ও ট্যাব সে উপায় রুট করা যাবে। মিডিয়াটেকের চিপে সাধারণত ওটিজি সাপোর্ট থাকে না, কিছু ফোন ও ট্যাবে বিশেষ উপায় সেগুলো দেয়া হয়। মিডিয়াটেকের সব চিপের ড্রাইভার ও ফ্ল্যাশ টুল সাধারণত একই রকম হয়ে থাকে। তবে এক মডেলের চিপের কার্নেল অন্য মডেলে চলবে না।
বাজারে মিডিয়াটেকের চিপের উপর ভিত্তি করে তৈরি ফোনের অভাব নেই। তাই যদি নামী দামী ব্র্যান্ডের ফোন না হয় (ট্যাবের ক্ষেত্রেও, যদি সিম সাপোর্টেড হয়) তা হলে ধরে নেওয়া যেতে পারে সেটিও এগুলোরই কোনো একটি চিপের। যদি বলে না দেয়া থাকে তা হলেও খুব সহজেই CPU/RAM/DEVICE IDENTIFIER ইত্যাদি অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটলের মাধ্যমে জেনে নিতে পারবেন ফোন বা ট্যাবের চিপ কোনটি।
এই সুদীর্ঘ পোস্টটি ধৈর্য ধরে পড়ার জন্যে ধন্যবাদ। আশা করি মিডিয়াটেকের বিভিন্ন চিপসেট সম্পর্কে কিছুটা হলেও আলোকপাত করতে পেরেছি। আপনাদের মতামত এবং আরো কিছু তথ্য যেগুলো হয়ত বাদ পড়েছে সেসব জানিয়ে আমাদের এখানে মন্তব্য করতে ভুলবেন না।
No comments:
Post a Comment