এটা খুবই স্বাভাবিক যে কম্পিউটারে আপনার অনেক ব্যক্তিগত বা স্পর্শকাতর
তথ্য জমা থাকে। কেউই নিশ্চয়ই চাইবেন না আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সম্পর্কে অন্য
কেউ জেনে যাক। ইন্টারনেটেও নিজের ব্যক্তিগত সুরক্ষার জন্যে তথ্য অন্যের
নাগালের বাইরে রাখা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু কথা হচ্ছে, কিভাবে? আপনি কিভাবে
বিশেষ কিছু তথ্য অন্য কারু নাগালের বাইরে রাখতে পারেন কিংবা নিরাপদে ইমেইলে
অন্য কাউকে গোপনীয় বা ব্যক্তিগত তথ্য পাঠাতে পারেন? এসব নিয়েই আজকের
আলোচনা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে আপনি কিভাবে এই পদ্ধতিতে তথ্য সুরক্ষিত করবেন? এজন্যে আসলে অনেকগুলো পদ্ধতি রয়েছে। তার মধ্যে তুলনামূলক সহজ ও বহুল ব্যবহৃত কিছু পদ্ধতি নিয়ে এখানে আলোচনা করা হল।
7-Zip সফটওয়্যারটি কম্পিউটারে ইনস্টল করার পর আপনি এর সাহায্য আর্কাইভ প্রস্তুত করতে পারবেন। চাইলে পাসওয়ার্ড দিয়ে সেই আর্কাইভ সুরক্ষিত করে রাখতে পারবেন। এক্ষেত্রে একটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে আপনার এনক্রিপ্ট টাইপ যেন AES-256 নির্বাচন করা থাকে। এখন আপনি আপনার পাসওয়ার্ড প্রোটেক্টেড আর্কাইভে যে তথ্যই রাখুন না কেন সেটি স্বয়ংক্রিয় ভাবে ওই পাসওয়ার্ডের সাহায্যে সুরক্ষিত থাকবে। কেউ যদি ওই তথ্যের প্রবেশাধিকার চায় অর্থাৎ আর্কাইভে ঢুকতে তবে তাকে ওই পাসওয়ার্ড দিয়ে প্রবেশ করতে হবে।
মাইক্রোসফট অফিস ২০১০ কিংবা ২০১৩ সংস্করণে এনক্রিপ্টের মাধ্যমে ফাইল সুরক্ষিত রাখতে আপনাকে প্রথমে ফাইল মেন্যু নির্বাচন করতে হবে। তারপর সেখানে প্রটেক্ট ডকুমেন্টে গেলে দেখতে পাবেন এনক্রিপ্ট উইথ পাসওয়ার্ড নামে অপশন রয়েছে। সেখান থেকে পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে আপনার যেকোনো মাইক্রোসফট অফিস ফাইল নিরাপদ রাখতে পারেন। এরপর কেউ ওই ডকুমেন্ট সম্পাদনা করতে চাইলে তার জন্যে সেই নির্দিষ্ট পাসওয়ার্ড প্রয়োজন হবে।
মাইক্রোসফট অফিস ২০১৩ আপনাকে পিডিএফ ফাইলও এনক্রিপ্টের মাধ্যমে সুরক্ষিত রাখার সুবিধা দেবে।
এনক্রিপ্ট কি?
প্রথমত কথা হচ্ছে, আপনি যদি কম্পিউটারে সংরক্ষিত কোন তথ্যে অন্য কাউকে প্রবেশাধিকার দিতে না চান তবে প্রথমে আপনাকে ওই তথ্যের ওপর একটি বাড়তি সুরক্ষা আবরণী দিতে হবে। আর এই বাড়তি সুরক্ষা আবরণী দেওয়াকে বলা হচ্ছে এনক্রিপ্ট করা বা সহজ কথায় পাসওয়ার্ড প্রোটেক্ট করা। মূলত যেকোনো ব্যবস্থায় পাসওয়ার্ড ব্যবহার করার ব্যাপারটি আসলে ওই সিস্টেমটিকে এনক্রিপ্ট করা। ফলে ওই এনক্রিপ্টিং পাসওয়ার্ড ব্যতীত ওই ব্যবস্থার কোন অংশের পরিবর্তন করা যায় না। অর্থাৎ ওই ব্যবস্থা অথবা তথ্য সুরক্ষিত থাকে।এখন প্রশ্ন হচ্ছে আপনি কিভাবে এই পদ্ধতিতে তথ্য সুরক্ষিত করবেন? এজন্যে আসলে অনেকগুলো পদ্ধতি রয়েছে। তার মধ্যে তুলনামূলক সহজ ও বহুল ব্যবহৃত কিছু পদ্ধতি নিয়ে এখানে আলোচনা করা হল।
একটি এনক্রিপটেড আর্কাইভ তৈরি করে
উইন্ডোজ এক্সপি পাসওয়ার্ড প্রোটেক্টেড জিপ (ZIP) ফাইল তৈরি করার সুযোগ দিয়ে থাকে। কিন্তু উইন্ডোজ ৭ এই সুবিধাটি দেয় না। তবে চিন্তা নেই। আপনি চাইলে থার্ড পার্টি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের মাধ্যমে এই সুবিধা পেতে পারেন যা আপনাকে পাসওয়ার্ড প্রোটেক্টেড ফাইল কম্প্রেসনের সুযোগ দেবে। এর জন্যে অনেক ধরণের সফট্ওয়্যার থাকলেও বহুল ব্যবহৃত এমন একটি সফটওয়্যার হচ্ছে 7-Zip। এটি ওপেন সোর্স বা সম্পূর্ণ ফ্রী একটি সফট্ওয়্যার। এর সাহায্যে সহজেই আপনি আপনার ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারেন।7-Zip সফটওয়্যারটি কম্পিউটারে ইনস্টল করার পর আপনি এর সাহায্য আর্কাইভ প্রস্তুত করতে পারবেন। চাইলে পাসওয়ার্ড দিয়ে সেই আর্কাইভ সুরক্ষিত করে রাখতে পারবেন। এক্ষেত্রে একটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে আপনার এনক্রিপ্ট টাইপ যেন AES-256 নির্বাচন করা থাকে। এখন আপনি আপনার পাসওয়ার্ড প্রোটেক্টেড আর্কাইভে যে তথ্যই রাখুন না কেন সেটি স্বয়ংক্রিয় ভাবে ওই পাসওয়ার্ডের সাহায্যে সুরক্ষিত থাকবে। কেউ যদি ওই তথ্যের প্রবেশাধিকার চায় অর্থাৎ আর্কাইভে ঢুকতে তবে তাকে ওই পাসওয়ার্ড দিয়ে প্রবেশ করতে হবে।
মাইক্রোসফট অফিস ফাইল এনক্রিপ্ট করে
মাইক্রোসফট অফিস এনক্রিপ্টের মাধ্যমে ফাইল সুরক্ষিত করার সুবিধা দিয়ে থাকে। মাইক্রোসফট তাদের অফিস ২০০৭ থেকে এইএস (AES) এনক্রিপ্সন ব্যবস্থা চালু করেছে। সুতরাং মাইক্রোসফট অফিস ২০০৭ সহ আপনি এর পরবর্তী সংস্করণে আরও ভাল এনক্রিপ্ট সুবিধা পাবেন।মাইক্রোসফট অফিস ২০১০ কিংবা ২০১৩ সংস্করণে এনক্রিপ্টের মাধ্যমে ফাইল সুরক্ষিত রাখতে আপনাকে প্রথমে ফাইল মেন্যু নির্বাচন করতে হবে। তারপর সেখানে প্রটেক্ট ডকুমেন্টে গেলে দেখতে পাবেন এনক্রিপ্ট উইথ পাসওয়ার্ড নামে অপশন রয়েছে। সেখান থেকে পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে আপনার যেকোনো মাইক্রোসফট অফিস ফাইল নিরাপদ রাখতে পারেন। এরপর কেউ ওই ডকুমেন্ট সম্পাদনা করতে চাইলে তার জন্যে সেই নির্দিষ্ট পাসওয়ার্ড প্রয়োজন হবে।
মাইক্রোসফট অফিস ২০১৩ আপনাকে পিডিএফ ফাইলও এনক্রিপ্টের মাধ্যমে সুরক্ষিত রাখার সুবিধা দেবে।
ট্রুক্রিপ্টের সাহায্যে এনক্রিপ্টেড ভলিউম তৈরি করে
ট্রুক্রিপ্টের সাহায্যে এনক্রিপ্টেড ভলিউম তৈরি করে আপনি চাইলে তথ্যের নিরাপত্তা বিধান করতে পারেন। এটি যেসব সুবিধা দিয়ে থাকে সেগুলো হল-- হার্ড ড্রাইভে একটি এনক্রিপটেড ভলিউম তৈরির সুযোগ দেয়। ফলে পাসওয়ার্ড ব্যতীত সেই ভলিউমে কারো প্রবেশাধিকার থাকে না।
- যেকোনো ধরণের ইউএসবি ফ্ল্যাশ ড্রাইভে এনক্রিপ্টেড ভলিউম তৈরির সুযোগ দেয়। ফলে কোন কারণে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্বলিত ফ্ল্যাশ ড্রাইভ হারিয়ে গেলেও কেউ আপনার তথ্য থাকবে সুরক্ষিত। এছাড়া ট্রুক্রিপ্টকে একটি পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশন হিসেবে ব্যবহার করা যায়। ফলে অন্য কোন কম্পিউটার থেকে ফ্ল্যাশ ড্রাইভে এনক্রিপ্টেড অবস্থায় থাকা তথ্যের প্রবেশাধিকার পেতে নতুন করে সেখানে ট্রুক্রিপ্ট ইনস্টল করার প্রয়োজন নেই।
- উইন্ডোজের সমগ্র সিস্টেম ড্রাইভকে এনক্রিপ্ট করার সুযোগ দেয়। ফলে কেউ কম্পিউটার চালু করার সময় অথবা হাইবারনেট কিংবা স্লিপ মোড থেকে কম্পিউটার চালু করার সময় পাসওয়ার্ডের প্রয়োজন পড়বে। ফলে আপনি অনাকাঙ্ক্ষিত অনুপ্রবেশকারীর হাত থেকে আপনার পিসিকে রাখতে পারবেন সুরক্ষিত (যদি না সেই অনাকাঙ্ক্ষিত অনুপ্রবেশকারী 'ফ্রীজ অ্যাটাক' ব্যবহার করেন। তবে এ ধরণের ঘটনা বাস্তবিক ক্ষেত্রে খুবই বিরল)।
উইন্ডোজের বিল্টইন এনক্রিপশন সুবিধা ব্যবহার করে
আপনি যদি উইন্ডোজের প্রফেশনাল অথবা এন্টারপ্রাইজ ভার্সন ব্যবহার করেন তবে এতে কিছু বিশেষ এনক্রিপ্সন সুবিধা বিল্টইন অবস্থায় পাবেন। তবে উইন্ডোজের হোম ভার্সন এবং স্ট্যান্ডার্ড এডিশনের উইন্ডোজ ৮ –এ এই বিশেষ সুবিধাগুলো পাওয়া যাবে না। প্রফেশনাল এডিশনের উইন্ডোজে যে সকল বিল্টইন এনক্রিপশন সুবিধা পাবেন সেগুলো হচ্ছে-- বিটলকারঃ যা আপনাকে ইউএসবি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ সহ হার্ড ড্রাইভে এনক্রিপটেড ভলিউম তৈরির সুবিধা দেবে। এটি অনেকটা ট্রুক্রিপ্টের মত কাজ করে।
- এনক্রিপ্টিং ফাইল সিস্টেম বা ইএফএস (EFS): এটি আপনাকে নির্দিষ্ট এক বা একাধিক ফাইল এনক্রিপ্ট করার সুবিধা দেবে। এর জন্যে আপনাকে ফাইল বা ফোল্ডারের ওপর ডান-ক্লিক করে প্রপার্টিজে গিয়ে এডভান্স মেন্যু নির্বাচন করতে হবে। যদি আপনি সঠিক সংস্করণের উইন্ডোজ ব্যবহার করে থাকেন তবে সেখানে ফাইল অথবা ফোল্ডার এনক্রিপ্ট করার সুযোগ পাবেন। নয়তো সেগুলো ধূসর বর্ণের হয়ে থাকবে অর্থাৎ এই সুবিধা পাবেন না। এক্ষেত্রে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে জে, এই ব্যবস্থায় ফাইল এনক্রিপ্ট করলে তাতে প্রবেশাধিকার পেতে হলে আপনার উইন্ডোজ পাসওয়ার্ড লাগবে। তাই আপনি যদি সেটি ভুলে যান তবে ফাইলগুলোতে বা ফোল্ডারগুলোতে আপনি নিজেই আর প্রবেশ করতে পারবেন না। আর একটি ব্যাপার হচ্ছে এই এনক্রিপশন ব্যবস্থা কেবলমাত্র আপনার হার্ড ড্রাইভে থাকা তথ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আপনি যদি সেই ফাইল অথবা ফোল্ডারগুলোকে নিরাপদে ইমেইলে প্রেরণ করতে চান কিংবা ফ্ল্যাশ ড্রাইভে করে বহন করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে অন্য কোন এনক্রিপশন ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
No comments:
Post a Comment