প্রযুক্তির এই সময়ে অনেক রকমের ডিভাইসের মাঝে অন্যতম একটি
খুবই প্রয়োজনীয় ডিভাইস হচ্ছে ‘ল্যাপটপ’। প্রয়োজনের তাগিদে প্রযুক্তি
পন্যগুলো আস্তে আস্তে যেন ছোট হয়ে আসছে। চিপ, মাইক্রো চিপ, ন্যানো চিপ –
যেন চলছে প্রযুক্তিকে সাধারন দৃষ্টি সীমার বাইরে নেবার। এরকম চেষ্টা চলছিল
বলেই হয়ত আজকে আমি আমার ল্যাপটপটি দিয়ে লিখে যেতে পারছি।
এসপ্তাহেই আমি দু’টি ল্যাপটপ কিনেছি। না, কোনটিই আমার জন্যে নয়। আমার ভূমিকা সীমাবদ্ধ ছিল ‘সাজেশন দাতা’ হিসেবেই। এই দুটি ল্যাপটপ কেনার পর বা সঠিক ভাবে বললে সাজেস্ট করার পর মনে হল যে এই প্রসঙ্গে একটি সচেতনতা মূলক ব্লগ পোষ্ট লিখলে সবার না হোক, অন্তত দু’এক জনের উপকারেতো আসবেই। সবাইতো আর টেক গিক নয়, অবশ্য ল্যাপটপ কেনার ব্যাপারে টেক গিক হবার প্রয়োজনও কই? যাই হোক, এজন্যেই আজকের এই ব্লগ পোষ্টটি লিখতে বসা। চলুন, দেখা যাক আপনাদের উপকারে আসতে পারি কি না।
আকারে তুলনামূলক ভাবে ছোট, ওজনে কম এবং সহজে বহনশীল – এভাবেই হয়ত ল্যাপটপকে করা যায় সংজ্ঞায়িত। বেশির ভাগ মানুষেরই তাদের কম্পিউটারের হাতেখড়ি শুরু হয়ে থাকে ডেস্কটপ কম্পিউটার থেকে এবং পরবর্তী সময়ে সময় এবং প্রয়োজনের তাগিদে তারা ল্যাপটপ কিনে থাকেন। ডেস্কটপ কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার সম্পর্কে যারা কিছুটা হলেও জানেন তাদের জন্য আসলে ল্যাপটপ কেনাটা খুব সহজই হয়ে যায়, কেননা মূল দিক গুলোতে থাকেনা কোন প্রকারের পার্থক্য। তবে অনেক ডেস্কটপ ব্যবহারকারী রয়েছেন যাদের কম্পিউটারের জ্ঞান অনেকটাই মাইক্রোসফট অফিস এর মধ্যে সীমাবদ্ধ। তাদের ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা হয় ল্যাপটপ কিনতে গেলে কেননা তারা কষ্ট বা অনেক সময় সনাতন ভয়ের কারনে মাইক্রোসফট অফিসের গন্ডি থেকে না বেরিয়ে কখনোই হার্ডওয়্যার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেননি। যাই হোক, আপনি যদি এমন হয়ে থাকেন তবে আপনি আশা করছি সঠিক পোষ্টটিই পড়ছেন। পড়তে থাকুন, কাজে লাগবেই।
এখন আর কথা না বাড়িয়ে আমি শুরু করছি যে ঠিক কোন কোন বিষয়গুলো একটি ল্যাপটপ কেনার আগে মাথায় রাখা উচিৎঃ
প্রয়োজন এবং সাধ্যঃ আপনাকে প্রথমে আপনার নিজের প্রয়োজনটাকে এবং আপনার সাধ্যের সমন্বয় ঘটাতে হবে। আপনার সাধ্য এবং প্রয়োজনের মাত্রার উপরেই আসলে নির্ভর করে আপনার কোন ধরনের কনফিগারেশনের ল্যাপটপ প্রয়োজন। বাজারেতো অনেক ধরনেরই ল্যাপটপ পাওয়া যায়। বিভিন্ন রকমের কনফিগারেশনের সেই ল্যাপটপগুলোর দামও হয় ভিন্ন ভিন্ন, তাই আপনার চাহিদা বুঝেই প্রথম সিদ্ধান্তে আসা উচিৎ আপনার। সেক্ষেত্রে, আপনি যদি বাড়িতে বসেই হাই গ্রাফিক্সের কাজ করতে চান তার জন্য আপনার ব্যাগ ভর্তি টাকা নিয়ে এলিয়েনওয়্যার কেনারতো কোন প্রয়োজন নেই। কেননা, ঐ দামে আপনি ডেস্কটপ কম্পিউটার কনফিগার করলে এরচেয়েও ভালো পারফর্মেন্স পাবেন তাতে কোন সন্দেহ নেই। ধরছি, আপনার ল্যাপটপই লাগবে। আপনি সেই ল্যাপটপটি দিয়ে কি করতে চান? গান অথবা মুভি দেখবেন? মাইক্রোসফট অফিসে ভার্সিটির অ্যাসাইনমেন্ট প্রস্তুত করবেন নাকি অফিসের কাজ? হালকা-পাতলা গেম খেলবেন? – এই সবগুলো কাজই যদি হয়ে থাকে আপনার মূল বা স্বাভাবিক কাজ তবে এর জন্য খুব ভালো কনফিগারেশনের একটি ল্যাপটপ দরকার নেই। সেলেরন প্রসেসর বা ডুয়াল কোর প্রসেসরের একটি ল্যাপটপই আপনার এই চাহিদা গুলো পূরন করে দেবে খুব সহজেই। হয়তোবা সেলেরন আর ডুয়াল প্রসেসর আপনাকে ‘উচ্চ মানে গেম’ খেলতে সাহায্য করবেন না তবে আগেই আমি উল্লেখ করেছি ‘হালকা-পাতলা গেম’-এর কথা। আপনি যদি কিছুটা অ্যাডভান্স লেভেলের কাজ ল্যাপটপ দিয়ে করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে আপনার ল্যাপটপের বাজেট বাড়াতে হবে। ধরুন, আপনি ভিডিও এডিট করতে চাচ্ছেন মোটামুটি প্রফেশনালি, তবে আপনার ল্যাপটপের র্যা ম বেশি হতে হবে। সাথে প্রসেসরটিও হতে হবে কিছুটা উন্নত মানের, লাগবে ভালো মানের গ্রাফিক্স সাপোর্ট। আর আপনি যদি ভালো ভালো গেম খেলতে চান হাই-পারফরমেন্সে তবেতো কথাই নেই, আপনাকে সোজাসুজি চলে যেতে হবে গেমিং সিরিজের ল্যাপটপের লাইনে। আবার আপনি স্লিম ল্যাপটপ চান কিনা – এটাও এযুগে ভেবে দেখবার মত একটি বিষয়।
আসলে ‘প্রয়োজন বুঝে’ কেনাটাই ল্যাপটপ কেনার আগে খেয়াল করার মত বিষয়গুলোর সবচাইতে বড় একটি দিক। এখন আমি ভেঙ্গে ভেঙ্গে ল্যাপটপের হার্ডওয়্যার কম্পোনেন্ট গুলো কি রকম বেছে নেয়া উচিৎ বলতে চেষ্টা করবো, কারও দ্বিমত থাকতেই পারে আমার মতামতের সাথে; সেক্ষেত্রে, আমি দুঃখিত।
প্রোসেসরঃ ডেস্কটপ কম্পিউটারের কথা বলি আর ল্যাপটপ, ‘প্রোসেসর’ হচ্ছে এই দুটি ডিভাইসেরই মূল অংশ। ‘প্রসেসর’, যার কাজ সহজে বললে বলতে হয় ‘প্রোসেস করা’। আপনার কম্পিউটারটির মাঝে প্রতিটি সেকন্ডে আপনার এবং মেশিনের, দুজনের ইন্সট্রাকশনই প্রসেস করে থাকে। এখন প্রসেসরের শক্তির রকম ভেদ করা হয় প্রতিসেকেন্ডে বা একটি একক সময়ে এর প্রসেস করার ক্ষমতার উপর। বর্তমান সময়ে এ.এম.ডি এবং ইন্টেলের প্রসেসরের ল্যাপটপ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। তবে ব্র্যান্ডের দৌড়ে এখন পর্যন্ত ‘ইন্টেলের’ প্রসেসর বিশিষ্ট ল্যাপটপই বাজারে বেশি দেখা যায়। ল্যাপটপ কেনার আগে প্রসেসরের ‘জেনারেশন’ এবং এর ‘ক্লক-স্পিড’ খেয়াল করে কেনা উচিৎ। ‘জেনারেশন’ বা ‘প্রজন্ম’ থেকেই মোটামুটি বেসিক তথ্য আন্দাজ করে নেয়া সম্ভব। যেমন, ৩য় প্রজন্মের প্রসেসর একটি ল্যাপটপ নিশ্চয়ই একই সিরিজের ৪র্থ প্রজন্মের প্রসেসরের কার্যক্ষমতাকে হারাতে পারবেনা। উল্লেখ্য, সর্বশেষ বাজারে আসা সর্বশেষ জেনারেশেনের প্রসেসর বিশিষ্ট ল্যাপটপ গুলো কিছুটা দামী হয়ে থাকে, সেই সাথে এদের কার্যক্ষমতাও। ডেস্কটপের মত ল্যাপটপে প্রসেসর আপগ্রেড করা যায়না। যদিও, আপনি আপনার একই সিরিজের একই মডেলের মাদারবোর্ড এর সকেট সমর্থিত প্রসেসর আপগ্রেড করতে পারেন তবে এটা খুবই ঝামেলার একটি প্রোসেস এবং অভিজ্ঞ ব্যাক্তির সহায়তা ছাড়া একাজটি একদমই করা উচিৎ হবেনা। তাই, চেষ্টা করা উচিৎ ল্যাপটপ কেনার সময়েই ভালো মানের প্রসেসর যুক্ত একটি ল্যাপটপ কেনা।
র্যামঃ আপনার ল্যাপটপের র্যামের মেমরী যত বেশি হবে আপনার ল্যাপটপটি তত দ্রুত লাগবে আপনার কাছেই। স্বাভাবিক ভাবে ২ গিগাবাইট এবং ৪ গিগাবাইট র্যাম মেমরী বিশিষ্ট ল্যাপটপ বাজারে বেশি বিক্রি হয়ে থাকে তবে এটি সহজেই আপনি পরবর্তী সময়ে যোগ করতে পারবেন। এছাড়াও মেমরী টাইপ এবং এর বাস স্পিড এর দিকে খেয়াল রাখবেন। বর্তমান বাজারে DDR3 মানের মেমরী টাইপের ল্যাপটপ ছাড়া আপাতত চোখে পড়েনি আমার। আপনি যত মেমরী বিশিষ্ট ল্যাপটপই কিনতে চান খেয়াল রাখবেন ল্যাপটপটি সর্বোচ্চ কত পরিমানের র্যাম সাপোর্ট করে থাকে যেন পরবর্তীসময়ে ইচ্ছেমত আপনি র্যাম লাগিয়ে নিতে পারেন।
জি.পি.ইউঃ ‘গ্রাফিক্স প্রোসেসিং ইউনিট’ একটি গুরুত্ব পূর্ন কম্পোনেন্ট। সাধারন ভাবে ল্যাপটপের মূল চিপে বিল্ট ইন গ্রাফিক্স হিসেবে ইন্টেল এইচডি ৩০০০/৪০০০ দেয়াই থাকে তবে ল্যাপটপের ক্ষেত্রে আপনি গ্রাফিক্স ছাড়া একটি ল্যাপটপ কেনার পর পরবর্তী সময়ে আপাতত আপনি গ্রাফিক্স কার্ড যোগ করতে পারবেন না। তাই, চেষ্টা করুন ‘গ্রাফিক্স কার্ড’ সম্বলিত একটি ল্যাপটপ কেনার। বর্তমান বাজারে ১ গিগাবাইট ডেডিকেটেড গ্রাফিক্স কার্ড বিশিষ্ট ল্যাপটপ ৩৮-৪০ হাজার টাকাতেও পাওয়া যাচ্ছে।
ডিসপ্লে / মনিটরঃ এটিও আসলে আপনার চাহিদার সাথেই সম্পর্কিত। কাজ করা জন্য স্বাভাবিক ভাবে ১৪” স্ক্রিনের ল্যাপটপ গুলো বেশি জনপ্রিয়। তবে, আপনি আপনার কাজের ধারা অনুযায়ী মনিটর কিনতে চেষ্টা করুন। বর্তমান বাজারে মনিটর এর মাপ যাই হোক না কেন এলসিডি মনিটরগুলোই জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছে। অবশ্য আমার এই জরিপ ব্যাক্তিগত এবং টাকা এই জরিপে উল্লেখযোগ্য প্রভাব বিস্তার করেছে। তবে চোখের জন্য ‘এলইডি’ মনিটরই ভালো হবে।
হার্ড ডিস্কঃ সাধারণত ২৫০ গিগাবাইট, ৩২০ গিগাবাইট, ৫০০ গিগাবাইট, ৭৫০ গিগাবাইট এবং ১ টেরাবাইটযুক্ত ল্যাপটপ গুলোই বাজারে বেশি পাওয়া যায়। তবে, আপনি ইচ্ছে করলেই আপনার হার্ড ডিস্ক আপগ্রেড করতে পারবেন, সেক্ষেত্রে প্রথমেই খুব বেশি চিন্তা করার দরকার নেই। তবে হার্ডিডিস্কের আরপিএম চেক করে ল্যাপটপ কিনতে ভুলবেন না।
ব্যাটারীঃ ল্যাপটপ কেনার সময় এর ব্যাটারী ব্যাক আপ সম্পর্কে অবগত হন। ল্যাপটপ যখন খুশি যেখানে ইচ্ছা আপনি ব্যবহার করতে পারছেন সেটাতো এই ল্যাপটপের কারনেই। বাজারে ল্যাপটপ কেনার ক্ষেত্রে ৪ সেল এবং ৬ সেলের ব্যাটারী পাওয়া যায়।
অন্যান্যঃ আরও কিছু ছোট ছোট বিষয় মাথায় রাখা উচিৎ ল্যাপটপ কেনার ক্ষেত্রে। যেমন, ল্যাপটপের ওজন। একটু বাজার ঘুরলেই আপনি বিভিন্ন ম্যানুফ্যাকচারার কোম্পানির তৈরী আল্ট্রা স্লিম ল্যাপটপ দেখতে পারবেন যেগুলো খুবই আকর্ষনিয়। আল্ট্রা বুকের ক্ষেত্রে অবশ্য দাম কিছুটা হলেও বেশি পরবে তবে এতে করে আপনার ল্যাপটপটি দেখতে আকর্ষনিয় হবে এবং এর ওজনও হবে কম। যারা ল্যাপটপ ব্যাক প্যাকে নিয়ে চলাফেরা করি তারা ভালো করেই জানেন যে একটি ভারী ল্যাপটপ বহন করা কতটা ঝামেলার।
ওয়েবক্যামঃ ল্যাপটপের সাথে একটি ওয়েব ক্যামেরা দেয়া থাকে যাতে করে আপনি ভিডিও কল, ভিডিও চ্যাট অথবা ভিডিও কনফারেন্সের মত জরুরী কাজের পাশাপাশি টুক টাক সেলফিও মাঝে মাঝে তুলতে পারেন। এক্ষেত্রে বর্তমানের ল্যাপটপ গুলোতে ২ মেগাপিক্সেলের ওয়েব ক্যামেরা যুক্ত থাকে এবং ল্যাপটপ ম্যানুফ্যাকচারার কোম্পানিগুলো এগুলোকে এইচডি বলেও দাবি করেন। তাই, ক্যামেরা কেনার সময় লক্ষ্য রাখবেন ওয়েব ক্যামেরার মানের উপর।
সাউন্ডঃ আপনি যদি গান পাগল হয়ে থাকেন অথবা ল্যাপটপ দিয়ে মুভি দেখার কাজটা ভালো ভাবেই চালিয়ে নিতে চান তবে পারলে ল্যাপটপের সাউন্ডের ব্যাপারের সচেতন হন। দামি ল্যাপটপ গুলোতে স্পিকারের পাশাপাশি উফারও দেয়া থাকে এবং সেক্ষেত্রে মোটামুটি ভালো মানের সাউন্ড পাওয়া যায়। তবে উফার ছাড়া ল্যাপটপ গুলোর সাউন্ডের মান ঠিক ততোটা ভালো হয়না। আমি ডেল এবং এইচপি’র তিনটি ল্যাপটপ পরীক্ষা করে দেখেছি। তিনটির একটিরও সাউন্ড কোয়ালিটি আমার ভালো লাগেনি। অবশ্য, ল্যাপটপের ক্ষেত্রে ছোট স্পিকার ব্যবহার করতে হয় বলে হয়তো এর সাউন্ড কোয়ালিটি ততটা আশানুরুপ হয়না, এই ব্যাপারটিতে আমি নিশ্চিত নই।
ইউ.এস.বি পোর্টঃ বর্তমানে বাজারে যে সকল ল্যাপটপ পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোর সবগুলো পোর্ট অথবা দু’টি পোর্ট সাধারনত ইউ.এস.বি ৩ পোর্টের হয়ে থাকে। ইউ.এস.বি ৩ পোর্টের সাহায্যে আপনি কিছুটা দ্রুত ডাটা ট্রানসফার করতে পারবেন।
বডিঃ বিভিন্ন রকমের বডির প্রকারভেদে ল্যাপটপ পাওয়া যাচ্ছে এখন। মেটাল ফিনিশ, প্লাস্টিক, ম্যাট – এর মাঝে আমার ম্যাট ফিনিশিং এর ল্যাপটপই বেশি পছন্দ। তবে, আপনার পছন্দ নিশ্চয়ই আমার পছন্দ থেকে আলাদা হতেই পারে।
মূলত এই ব্যাপারগুলোর উপর লক্ষ্য রেখেই ল্যাপটপ কিনতে হয়। আপনি বাজারে জনপ্রিয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ কিনতে পারেন এবং কেনার সময় ওয়ারেন্টির কাগজ পত্র দেখে নিন। বাজারে বর্তমানে প্রায় সব ল্যাপটপের সাথেই ৩ বছরের ওয়ারেন্টি থেকে থাকে। ৩ বছরতো আর কম সময় নয়, আর ভালো ব্র্যান্ডের একটি দামি ল্যাপটপও যে নষ্ট হবেনা তা-ও নয়। তাই ভালো করে ওয়ারেন্টি’র কাগজ পত্র গুলো দেখে নিন। আর, ল্যাপটপের ড্রাইভার এর ব্যাক-আপ অথবা ডিস্ক বুঝে নিতেও ভুলবেন না।
ল্যাপটপ কিনতে চাইলে আপনি আইডিবি ভবনের রায়ানস, কম্পিউটার সোর্স, রিশিত কম্পিউটার্স, ড্যাফোডিল কম্পিউটার – দোকানগুলো ঘুরে কিনতে পারেন। আইডিবি ভবনে আরও অনেক দোকানই আছে তবে উল্লেখিত দোকানগুলোতে মোটামুটি বেশি কালেকশন পাওয়া যাবে। আর এদের সার্ভিস সেন্টার গুলো দ্রুত এবং ভালো সেবা প্রদান করে থাকে। আর, এই দোকানগুলোর বেশির ভাগেরই ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে শাখা রয়েছে।
ল্যাপটপ কেনার সময় পারলে অভিজ্ঞ কাউকে নিয়ে যাবেন। আপনি যদি ল্যাপটপের বিষয়ে দক্ষ না হয়ে থাকেন তবে এমন কাউকেও নেবেন না যে আপনাকে সাহায্য করতে পারবে না।
আশা করি, আজকের এই ব্লগ পোষ্টটি কিছুটা হলেও আপনাকে গাইড করবে ল্যাপটপ কেনার বিষয়ে। এখন আপনি আপনার সাধ, সাধ্য এবং পছন্দের সমন্বয়ে কিনে ফেলুন একটি ভালো মানের ল্যাপটপ এবং পারলে শেয়ার করে ফেলুন আপনার এক্সপেরিয়েন্স। ভালো থাকবেন।
এসপ্তাহেই আমি দু’টি ল্যাপটপ কিনেছি। না, কোনটিই আমার জন্যে নয়। আমার ভূমিকা সীমাবদ্ধ ছিল ‘সাজেশন দাতা’ হিসেবেই। এই দুটি ল্যাপটপ কেনার পর বা সঠিক ভাবে বললে সাজেস্ট করার পর মনে হল যে এই প্রসঙ্গে একটি সচেতনতা মূলক ব্লগ পোষ্ট লিখলে সবার না হোক, অন্তত দু’এক জনের উপকারেতো আসবেই। সবাইতো আর টেক গিক নয়, অবশ্য ল্যাপটপ কেনার ব্যাপারে টেক গিক হবার প্রয়োজনও কই? যাই হোক, এজন্যেই আজকের এই ব্লগ পোষ্টটি লিখতে বসা। চলুন, দেখা যাক আপনাদের উপকারে আসতে পারি কি না।
আকারে তুলনামূলক ভাবে ছোট, ওজনে কম এবং সহজে বহনশীল – এভাবেই হয়ত ল্যাপটপকে করা যায় সংজ্ঞায়িত। বেশির ভাগ মানুষেরই তাদের কম্পিউটারের হাতেখড়ি শুরু হয়ে থাকে ডেস্কটপ কম্পিউটার থেকে এবং পরবর্তী সময়ে সময় এবং প্রয়োজনের তাগিদে তারা ল্যাপটপ কিনে থাকেন। ডেস্কটপ কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার সম্পর্কে যারা কিছুটা হলেও জানেন তাদের জন্য আসলে ল্যাপটপ কেনাটা খুব সহজই হয়ে যায়, কেননা মূল দিক গুলোতে থাকেনা কোন প্রকারের পার্থক্য। তবে অনেক ডেস্কটপ ব্যবহারকারী রয়েছেন যাদের কম্পিউটারের জ্ঞান অনেকটাই মাইক্রোসফট অফিস এর মধ্যে সীমাবদ্ধ। তাদের ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা হয় ল্যাপটপ কিনতে গেলে কেননা তারা কষ্ট বা অনেক সময় সনাতন ভয়ের কারনে মাইক্রোসফট অফিসের গন্ডি থেকে না বেরিয়ে কখনোই হার্ডওয়্যার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেননি। যাই হোক, আপনি যদি এমন হয়ে থাকেন তবে আপনি আশা করছি সঠিক পোষ্টটিই পড়ছেন। পড়তে থাকুন, কাজে লাগবেই।
এখন আর কথা না বাড়িয়ে আমি শুরু করছি যে ঠিক কোন কোন বিষয়গুলো একটি ল্যাপটপ কেনার আগে মাথায় রাখা উচিৎঃ
প্রয়োজন এবং সাধ্যঃ আপনাকে প্রথমে আপনার নিজের প্রয়োজনটাকে এবং আপনার সাধ্যের সমন্বয় ঘটাতে হবে। আপনার সাধ্য এবং প্রয়োজনের মাত্রার উপরেই আসলে নির্ভর করে আপনার কোন ধরনের কনফিগারেশনের ল্যাপটপ প্রয়োজন। বাজারেতো অনেক ধরনেরই ল্যাপটপ পাওয়া যায়। বিভিন্ন রকমের কনফিগারেশনের সেই ল্যাপটপগুলোর দামও হয় ভিন্ন ভিন্ন, তাই আপনার চাহিদা বুঝেই প্রথম সিদ্ধান্তে আসা উচিৎ আপনার। সেক্ষেত্রে, আপনি যদি বাড়িতে বসেই হাই গ্রাফিক্সের কাজ করতে চান তার জন্য আপনার ব্যাগ ভর্তি টাকা নিয়ে এলিয়েনওয়্যার কেনারতো কোন প্রয়োজন নেই। কেননা, ঐ দামে আপনি ডেস্কটপ কম্পিউটার কনফিগার করলে এরচেয়েও ভালো পারফর্মেন্স পাবেন তাতে কোন সন্দেহ নেই। ধরছি, আপনার ল্যাপটপই লাগবে। আপনি সেই ল্যাপটপটি দিয়ে কি করতে চান? গান অথবা মুভি দেখবেন? মাইক্রোসফট অফিসে ভার্সিটির অ্যাসাইনমেন্ট প্রস্তুত করবেন নাকি অফিসের কাজ? হালকা-পাতলা গেম খেলবেন? – এই সবগুলো কাজই যদি হয়ে থাকে আপনার মূল বা স্বাভাবিক কাজ তবে এর জন্য খুব ভালো কনফিগারেশনের একটি ল্যাপটপ দরকার নেই। সেলেরন প্রসেসর বা ডুয়াল কোর প্রসেসরের একটি ল্যাপটপই আপনার এই চাহিদা গুলো পূরন করে দেবে খুব সহজেই। হয়তোবা সেলেরন আর ডুয়াল প্রসেসর আপনাকে ‘উচ্চ মানে গেম’ খেলতে সাহায্য করবেন না তবে আগেই আমি উল্লেখ করেছি ‘হালকা-পাতলা গেম’-এর কথা। আপনি যদি কিছুটা অ্যাডভান্স লেভেলের কাজ ল্যাপটপ দিয়ে করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে আপনার ল্যাপটপের বাজেট বাড়াতে হবে। ধরুন, আপনি ভিডিও এডিট করতে চাচ্ছেন মোটামুটি প্রফেশনালি, তবে আপনার ল্যাপটপের র্যা ম বেশি হতে হবে। সাথে প্রসেসরটিও হতে হবে কিছুটা উন্নত মানের, লাগবে ভালো মানের গ্রাফিক্স সাপোর্ট। আর আপনি যদি ভালো ভালো গেম খেলতে চান হাই-পারফরমেন্সে তবেতো কথাই নেই, আপনাকে সোজাসুজি চলে যেতে হবে গেমিং সিরিজের ল্যাপটপের লাইনে। আবার আপনি স্লিম ল্যাপটপ চান কিনা – এটাও এযুগে ভেবে দেখবার মত একটি বিষয়।
আসলে ‘প্রয়োজন বুঝে’ কেনাটাই ল্যাপটপ কেনার আগে খেয়াল করার মত বিষয়গুলোর সবচাইতে বড় একটি দিক। এখন আমি ভেঙ্গে ভেঙ্গে ল্যাপটপের হার্ডওয়্যার কম্পোনেন্ট গুলো কি রকম বেছে নেয়া উচিৎ বলতে চেষ্টা করবো, কারও দ্বিমত থাকতেই পারে আমার মতামতের সাথে; সেক্ষেত্রে, আমি দুঃখিত।
প্রোসেসরঃ ডেস্কটপ কম্পিউটারের কথা বলি আর ল্যাপটপ, ‘প্রোসেসর’ হচ্ছে এই দুটি ডিভাইসেরই মূল অংশ। ‘প্রসেসর’, যার কাজ সহজে বললে বলতে হয় ‘প্রোসেস করা’। আপনার কম্পিউটারটির মাঝে প্রতিটি সেকন্ডে আপনার এবং মেশিনের, দুজনের ইন্সট্রাকশনই প্রসেস করে থাকে। এখন প্রসেসরের শক্তির রকম ভেদ করা হয় প্রতিসেকেন্ডে বা একটি একক সময়ে এর প্রসেস করার ক্ষমতার উপর। বর্তমান সময়ে এ.এম.ডি এবং ইন্টেলের প্রসেসরের ল্যাপটপ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। তবে ব্র্যান্ডের দৌড়ে এখন পর্যন্ত ‘ইন্টেলের’ প্রসেসর বিশিষ্ট ল্যাপটপই বাজারে বেশি দেখা যায়। ল্যাপটপ কেনার আগে প্রসেসরের ‘জেনারেশন’ এবং এর ‘ক্লক-স্পিড’ খেয়াল করে কেনা উচিৎ। ‘জেনারেশন’ বা ‘প্রজন্ম’ থেকেই মোটামুটি বেসিক তথ্য আন্দাজ করে নেয়া সম্ভব। যেমন, ৩য় প্রজন্মের প্রসেসর একটি ল্যাপটপ নিশ্চয়ই একই সিরিজের ৪র্থ প্রজন্মের প্রসেসরের কার্যক্ষমতাকে হারাতে পারবেনা। উল্লেখ্য, সর্বশেষ বাজারে আসা সর্বশেষ জেনারেশেনের প্রসেসর বিশিষ্ট ল্যাপটপ গুলো কিছুটা দামী হয়ে থাকে, সেই সাথে এদের কার্যক্ষমতাও। ডেস্কটপের মত ল্যাপটপে প্রসেসর আপগ্রেড করা যায়না। যদিও, আপনি আপনার একই সিরিজের একই মডেলের মাদারবোর্ড এর সকেট সমর্থিত প্রসেসর আপগ্রেড করতে পারেন তবে এটা খুবই ঝামেলার একটি প্রোসেস এবং অভিজ্ঞ ব্যাক্তির সহায়তা ছাড়া একাজটি একদমই করা উচিৎ হবেনা। তাই, চেষ্টা করা উচিৎ ল্যাপটপ কেনার সময়েই ভালো মানের প্রসেসর যুক্ত একটি ল্যাপটপ কেনা।
র্যামঃ আপনার ল্যাপটপের র্যামের মেমরী যত বেশি হবে আপনার ল্যাপটপটি তত দ্রুত লাগবে আপনার কাছেই। স্বাভাবিক ভাবে ২ গিগাবাইট এবং ৪ গিগাবাইট র্যাম মেমরী বিশিষ্ট ল্যাপটপ বাজারে বেশি বিক্রি হয়ে থাকে তবে এটি সহজেই আপনি পরবর্তী সময়ে যোগ করতে পারবেন। এছাড়াও মেমরী টাইপ এবং এর বাস স্পিড এর দিকে খেয়াল রাখবেন। বর্তমান বাজারে DDR3 মানের মেমরী টাইপের ল্যাপটপ ছাড়া আপাতত চোখে পড়েনি আমার। আপনি যত মেমরী বিশিষ্ট ল্যাপটপই কিনতে চান খেয়াল রাখবেন ল্যাপটপটি সর্বোচ্চ কত পরিমানের র্যাম সাপোর্ট করে থাকে যেন পরবর্তীসময়ে ইচ্ছেমত আপনি র্যাম লাগিয়ে নিতে পারেন।
জি.পি.ইউঃ ‘গ্রাফিক্স প্রোসেসিং ইউনিট’ একটি গুরুত্ব পূর্ন কম্পোনেন্ট। সাধারন ভাবে ল্যাপটপের মূল চিপে বিল্ট ইন গ্রাফিক্স হিসেবে ইন্টেল এইচডি ৩০০০/৪০০০ দেয়াই থাকে তবে ল্যাপটপের ক্ষেত্রে আপনি গ্রাফিক্স ছাড়া একটি ল্যাপটপ কেনার পর পরবর্তী সময়ে আপাতত আপনি গ্রাফিক্স কার্ড যোগ করতে পারবেন না। তাই, চেষ্টা করুন ‘গ্রাফিক্স কার্ড’ সম্বলিত একটি ল্যাপটপ কেনার। বর্তমান বাজারে ১ গিগাবাইট ডেডিকেটেড গ্রাফিক্স কার্ড বিশিষ্ট ল্যাপটপ ৩৮-৪০ হাজার টাকাতেও পাওয়া যাচ্ছে।
ডিসপ্লে / মনিটরঃ এটিও আসলে আপনার চাহিদার সাথেই সম্পর্কিত। কাজ করা জন্য স্বাভাবিক ভাবে ১৪” স্ক্রিনের ল্যাপটপ গুলো বেশি জনপ্রিয়। তবে, আপনি আপনার কাজের ধারা অনুযায়ী মনিটর কিনতে চেষ্টা করুন। বর্তমান বাজারে মনিটর এর মাপ যাই হোক না কেন এলসিডি মনিটরগুলোই জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছে। অবশ্য আমার এই জরিপ ব্যাক্তিগত এবং টাকা এই জরিপে উল্লেখযোগ্য প্রভাব বিস্তার করেছে। তবে চোখের জন্য ‘এলইডি’ মনিটরই ভালো হবে।
হার্ড ডিস্কঃ সাধারণত ২৫০ গিগাবাইট, ৩২০ গিগাবাইট, ৫০০ গিগাবাইট, ৭৫০ গিগাবাইট এবং ১ টেরাবাইটযুক্ত ল্যাপটপ গুলোই বাজারে বেশি পাওয়া যায়। তবে, আপনি ইচ্ছে করলেই আপনার হার্ড ডিস্ক আপগ্রেড করতে পারবেন, সেক্ষেত্রে প্রথমেই খুব বেশি চিন্তা করার দরকার নেই। তবে হার্ডিডিস্কের আরপিএম চেক করে ল্যাপটপ কিনতে ভুলবেন না।
ব্যাটারীঃ ল্যাপটপ কেনার সময় এর ব্যাটারী ব্যাক আপ সম্পর্কে অবগত হন। ল্যাপটপ যখন খুশি যেখানে ইচ্ছা আপনি ব্যবহার করতে পারছেন সেটাতো এই ল্যাপটপের কারনেই। বাজারে ল্যাপটপ কেনার ক্ষেত্রে ৪ সেল এবং ৬ সেলের ব্যাটারী পাওয়া যায়।
অন্যান্যঃ আরও কিছু ছোট ছোট বিষয় মাথায় রাখা উচিৎ ল্যাপটপ কেনার ক্ষেত্রে। যেমন, ল্যাপটপের ওজন। একটু বাজার ঘুরলেই আপনি বিভিন্ন ম্যানুফ্যাকচারার কোম্পানির তৈরী আল্ট্রা স্লিম ল্যাপটপ দেখতে পারবেন যেগুলো খুবই আকর্ষনিয়। আল্ট্রা বুকের ক্ষেত্রে অবশ্য দাম কিছুটা হলেও বেশি পরবে তবে এতে করে আপনার ল্যাপটপটি দেখতে আকর্ষনিয় হবে এবং এর ওজনও হবে কম। যারা ল্যাপটপ ব্যাক প্যাকে নিয়ে চলাফেরা করি তারা ভালো করেই জানেন যে একটি ভারী ল্যাপটপ বহন করা কতটা ঝামেলার।
ওয়েবক্যামঃ ল্যাপটপের সাথে একটি ওয়েব ক্যামেরা দেয়া থাকে যাতে করে আপনি ভিডিও কল, ভিডিও চ্যাট অথবা ভিডিও কনফারেন্সের মত জরুরী কাজের পাশাপাশি টুক টাক সেলফিও মাঝে মাঝে তুলতে পারেন। এক্ষেত্রে বর্তমানের ল্যাপটপ গুলোতে ২ মেগাপিক্সেলের ওয়েব ক্যামেরা যুক্ত থাকে এবং ল্যাপটপ ম্যানুফ্যাকচারার কোম্পানিগুলো এগুলোকে এইচডি বলেও দাবি করেন। তাই, ক্যামেরা কেনার সময় লক্ষ্য রাখবেন ওয়েব ক্যামেরার মানের উপর।
সাউন্ডঃ আপনি যদি গান পাগল হয়ে থাকেন অথবা ল্যাপটপ দিয়ে মুভি দেখার কাজটা ভালো ভাবেই চালিয়ে নিতে চান তবে পারলে ল্যাপটপের সাউন্ডের ব্যাপারের সচেতন হন। দামি ল্যাপটপ গুলোতে স্পিকারের পাশাপাশি উফারও দেয়া থাকে এবং সেক্ষেত্রে মোটামুটি ভালো মানের সাউন্ড পাওয়া যায়। তবে উফার ছাড়া ল্যাপটপ গুলোর সাউন্ডের মান ঠিক ততোটা ভালো হয়না। আমি ডেল এবং এইচপি’র তিনটি ল্যাপটপ পরীক্ষা করে দেখেছি। তিনটির একটিরও সাউন্ড কোয়ালিটি আমার ভালো লাগেনি। অবশ্য, ল্যাপটপের ক্ষেত্রে ছোট স্পিকার ব্যবহার করতে হয় বলে হয়তো এর সাউন্ড কোয়ালিটি ততটা আশানুরুপ হয়না, এই ব্যাপারটিতে আমি নিশ্চিত নই।
ইউ.এস.বি পোর্টঃ বর্তমানে বাজারে যে সকল ল্যাপটপ পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোর সবগুলো পোর্ট অথবা দু’টি পোর্ট সাধারনত ইউ.এস.বি ৩ পোর্টের হয়ে থাকে। ইউ.এস.বি ৩ পোর্টের সাহায্যে আপনি কিছুটা দ্রুত ডাটা ট্রানসফার করতে পারবেন।
বডিঃ বিভিন্ন রকমের বডির প্রকারভেদে ল্যাপটপ পাওয়া যাচ্ছে এখন। মেটাল ফিনিশ, প্লাস্টিক, ম্যাট – এর মাঝে আমার ম্যাট ফিনিশিং এর ল্যাপটপই বেশি পছন্দ। তবে, আপনার পছন্দ নিশ্চয়ই আমার পছন্দ থেকে আলাদা হতেই পারে।
মূলত এই ব্যাপারগুলোর উপর লক্ষ্য রেখেই ল্যাপটপ কিনতে হয়। আপনি বাজারে জনপ্রিয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ কিনতে পারেন এবং কেনার সময় ওয়ারেন্টির কাগজ পত্র দেখে নিন। বাজারে বর্তমানে প্রায় সব ল্যাপটপের সাথেই ৩ বছরের ওয়ারেন্টি থেকে থাকে। ৩ বছরতো আর কম সময় নয়, আর ভালো ব্র্যান্ডের একটি দামি ল্যাপটপও যে নষ্ট হবেনা তা-ও নয়। তাই ভালো করে ওয়ারেন্টি’র কাগজ পত্র গুলো দেখে নিন। আর, ল্যাপটপের ড্রাইভার এর ব্যাক-আপ অথবা ডিস্ক বুঝে নিতেও ভুলবেন না।
ল্যাপটপ কিনতে চাইলে আপনি আইডিবি ভবনের রায়ানস, কম্পিউটার সোর্স, রিশিত কম্পিউটার্স, ড্যাফোডিল কম্পিউটার – দোকানগুলো ঘুরে কিনতে পারেন। আইডিবি ভবনে আরও অনেক দোকানই আছে তবে উল্লেখিত দোকানগুলোতে মোটামুটি বেশি কালেকশন পাওয়া যাবে। আর এদের সার্ভিস সেন্টার গুলো দ্রুত এবং ভালো সেবা প্রদান করে থাকে। আর, এই দোকানগুলোর বেশির ভাগেরই ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে শাখা রয়েছে।
ল্যাপটপ কেনার সময় পারলে অভিজ্ঞ কাউকে নিয়ে যাবেন। আপনি যদি ল্যাপটপের বিষয়ে দক্ষ না হয়ে থাকেন তবে এমন কাউকেও নেবেন না যে আপনাকে সাহায্য করতে পারবে না।
আশা করি, আজকের এই ব্লগ পোষ্টটি কিছুটা হলেও আপনাকে গাইড করবে ল্যাপটপ কেনার বিষয়ে। এখন আপনি আপনার সাধ, সাধ্য এবং পছন্দের সমন্বয়ে কিনে ফেলুন একটি ভালো মানের ল্যাপটপ এবং পারলে শেয়ার করে ফেলুন আপনার এক্সপেরিয়েন্স। ভালো থাকবেন।
No comments:
Post a Comment