সবাইকে নতুন বাংলা বছরের বৈশাখী শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আজকের দিনের আমার প্রথম পোষ্ট।
হার্ডডিস্ক কম্পিউটারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। মূলত আমরা পিসিতে যা কিছু সংরক্ষন করি ও দেখি সেগুলো সবই হার্ডডিস্কে সেইভ হয়। ক্রয়কৃত নতুন হার্ডডিস্কে সেইরকম কোন গুরুতর সমস্যা দেখা দেয় না। কিন্তু সমস্যা হয় ৬ মাস বা ১ বছর ব্যবহারের মাথায়। আর সেই সমস্যাটি হল হার্ড ডিস্কে ব্যাড সেক্টর পড়া। এটি একটি মূখ্য সমস্যা।
ব্যাড সেক্টর কি?
ব্যাড সেকটর হলো কিছু মেমোরি নষ্ট হয়ে যাওয়া। অর্থাৎ হার্ডডিস্কের যেখানে ব্যাড সেকটর পড়ে,সেখানে কোনো তথ্য সংরক্ষিত হয় না। হার্ড ডিস্কের মেমোরির যে অংশটুকু দীর্ঘ সময় ধরে ফাঁকা বা অব্যবহৃত থাকে,সেখানে ব্যাড সেকটর পড়ে। উদাহরন স্বরুপ বলা যায়, আপনি বাজার থেকে একটি নতুন টেবিল ক্রয় করে আনলেন টেবিলের উপর কিছু রাখলেন না। কিন্তু আপরার অগোচরে কেউ একজন সেখানে কিছু রাখল। তাতে নিশ্চয় টেবিলের ফাকা জায়গা পূরন হল। তেমনি হার্ডডিস্কে ঐ ভাবেই ব্যাডসেক্টর পড়ে। মূলত ঘন ঘন বিদুৎ চলে যাওয়া, ইউপিএস ব্যবহার না করার কারনে কিংবা হার্ডডিস্ক ড্রাইভ গুলো ডিফ্রাগমেন্ট কিংবা SFC না করার ফলে ব্যাড সেক্টর পড়ে
প্রধানত হার্ডডিস্কে ব্যাড সেক্টর ব্যবহারকারীর সংখ্যাই বেশী হবে। আর হবেই না কেন? দেশের যে বিদ্যুৎতের পরিস্থিতি। হার্ডডিস্কে ব্যাড সেক্টর পড়ে তা আমরা শুনেছি ও শুনলাম। কিন্তু এই ব্যাড সেক্টর রিপেয়ার করা যায় তা বোধ হয় কম সংখ্যক ব্যক্তিই জানি। আসলে কথাটা অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, এমন কিছু আধুনিক সফটওয়্যার আছে যার দ্বারা হার্ডডিস্কের ব্যাড সেক্টর রিপেয়ার করা যায়। আমি নিজেও এই রকম বেশ কয়েকটি ফ্রী সফট পূর্বে ব্যবহার করেছি। কিন্তু ফলাফল সন্তোষজনক ছিলনা। যে গুলো ভাল সফটওয়্যার সেই গুলো অর্থ দিয়ে ক্রয় করতে হবে। কাজেই সুয়োগের অপেক্ষায় ছিলাম। মূলত রাজধানী ঢাকা শহর সহ অনেক বিভাগীয় শহরগুলোতে অনেক টেকনিশিয়ান বলে থাকেন, তারা হার্ডডিস্ক রিপেয়ার করে থাকেন। প্রতি হার্ডিডিস্ক রিপেয়ার সার্ভিস ফী ২৫০-৫০০৳ । এটা কতটুকু তারা সার্ভিস দিবেন বা কোন সফওয়্যার ব্যবহার করেন তা আমি নিজেও জানি না।
আমার অভিজ্ঞতায় বলছি- ১। রাজশাহীর নিউ মার্কেটে একাধিক কম্পিউটার সার্ভিস সেন্টার রয়েছে। লেখাপড়ার সূত্রে রাজশাহীতে আসা তাদের প্রত্যেকের সাথে কম বেশী আমার পরিচয় আছে। এদের মধ্য একটি সার্ভিসিং সেন্টার আছে যেখানে- প্রতিদিন প্রায় ২০-৩০ টি হার্ডডিস্কের ব্যাড সেক্টর রিপেয়ারের কাজ করা হয়। কাজের চাপ ও কম নয়। তাই আমি ভাবলাম আমার হার্ডডিস্কটিও রিপেয়ার করে নিই। আমার ব্যাড সেক্টর রিপেয়ারের প্রয়োজন ছিল না।
কেননা মাত্র ১০ মাস হল ৩৮,৮৫০ টাকাতে নতুন পিসি ক্রয় করলাম। সেখানে সিগেট কোম্পানীর ১ টেরাবাইটের হার্ড ডিস্ক নিয়েছিলাম মাত্র ৫,০০০ টাকায়। এখন অবশ্য মার্কেটে হার্ডডিস্কের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে- ৫০০ এমবির দাম প্রায় ৭,০০০৳।
(উল্লেখ্য- সিগেট হল বর্তমানে হার্ডডিস্ক প্রস্তুতকরনে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠান। বেশ কয়েক বছর পূর্বে বাজারে Maxtor,Quantum নামে যে হার্ডডিস্ক কোম্পানী ছিল তা সিগেট মালিকানা হিসাবে গ্রহন করে-তথ্যসূত্র PC World.com-03/12/2011) তবু ভাবলাম হার্ডডিস্ক রিপেয়ার করতে দেয়া যাক।
কাজের ফলাফল কতটুকু সত্য তা জানা যাবে। হার্ডডিস্ক তাদের কাছে প্রেরন করলে তারা প্রতিউত্তরে বললেন মামা ৩০ মিনিট পর এসে হার্ডডিস্ক নিয়ে যাবেন। ৩০ মিনিট পর হার্ডডিস্ক গ্রহন করলাম। অবশ্য তারা আমার কাছ থেকে কোন ফী নিল না, আমি দিতে চাইলাম তবুও তারা গ্রহন করলেন না। আমি প্রশ্ন রাখলে প্রতিত্তরে তারা বললেন, আপনি কম্পিউটার বিষয়ে অনেক কিছু জানেন মামা! তাছাড়া প্রতিনিয়তই আপনার সাথে আমাদের দেখা হয়। আরে বলতে গেলে আপনি তো আমাদের পরিবারের সদস্য। তাই নিতে লজ্জাবোধ লাগছে। এই দিকে আমার মনেও সন্দেহ থেকে গেল – কিভাবে ১ টেরাবাইটের হার্ডডিস্ক মাত্র ৩০. মিনিটের সময়ের ব্যবধানে রিপেয়ারিং সম্ভব। অবশ্য আমি কোনরুপ মন্তব্য করলাম না। এই দিকে হলে/ছাত্রাবাসে এসে আমার কালেক্ট করা HDD Re generator সফটটির সাহায্য পরীক্ষা করে দেখলাম কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাহলে ভাবুন একেত আমার হার্ডডিস্কের এই অবস্থা হয় তাহলে অপরজনের হার্ডডিস্কের অবস্থা কিরুপ হবে তা খোদা-তায়ালাই ভাল জানেন। ঐ ঘটনার দিন বিকালে যেখানে হার্ডডিস্ক ঠিক করতে দিয়েছিলাম সেখানকার এক মামার সাথে আমার ক্যাম্পাসে দেখা। তাকে সব কিছু বললে তিনি বললেন, মামা আসলে কি বলব আমাদের কাছে রিপেয়ার করার মত ঐ সফট নেই। এখন পাবলিক ছাড়ে না তাই বাধ্য হয়ে হার্ডডিস্ক পার্টিশন বা সেটাপ করে তাদের অনেককে বুঝিয়ে দেয়া হয় ব্যাড সেক্টর রিকভার করা হয়েছে। আসলে সবাই তো আর কম্পিউটার প্রযুক্তি বোঝে না……. ইত্যাদি। আমরা অবশ্য Norton Ghost দিয়ে কাজ করি। (উল্লখ্য এখানে Norton Ghost কোন ব্যাড সেক্টর রিপেয়ারিং সফট নয়, মূলত হার্ডডিস্কের পার্টিশেনর কাজ করতে এবং সংক্ষেপে এক হার্ডডিস্ক থেকে অন্য হার্ডডিস্ক ড্রাইভকে ক্লোন করে O/S ট্রান্সপার করা হয়। যা মাত্র ০৮/১০ মিনিটে কাজ করা সম্ভব।)
যাহোক, অনেক গল্প হল। এবার কাজের কথায় আসি। আমি কিছুক্ষন পূর্বে HDD Re generator নামে যে সফটওয়্যারটির কথা বললাম। এটিই হল সেই সফটওয়্যার যার সাহায্য ব্যাড সেক্টর রিপেয়ার করা সম্ভব। হার্ডডিস্ক ব্যাড সেক্টর রিপেয়ার করার মত যত সফটওয়্যার আছে । এটি জনপ্রিয়তার দিক খেকে সকলের শীর্ষ পর্যায়ে ও একটি বিশ্বস্ততম ইউটিলিটি সফট। সফট ওয়্যারটি ডাউনলোড করতে আমার দেওয়া লিংক অনুসরন করলেই চলবে।
১। সফট ওয়্যারটি ডাউনলোড করে যখন ইনষ্টল করবেন তখন ইনষ্টলের শেষ পর্যায়ে নিম্নোক্ত চিত্রনুয়ায়ী Launch the program থেকে টিক উঠিয়ে দিয়ে Finish করুন। ভূলেও প্রোগ্রামটি রান করবেন না।
২। এবার উক্ত ডাউনলোড করা ফাইল থেকে HDD Regenerator.exe এবং hddreg.exe ফাইল দুটি কপি করে C:\Program Files\HDD Regenerator
ফোল্ডারে copy & Paste করে Replace করুন
৩। এখন HDD Regenerator ফাইলটি রান করুন/চালু করুন। দেখা যাবে সফটওয়্যারটির রেজিষ্টার্ড ভার্সন হয়ে গেছে
৪। এবার কাজের পালা। আপনি যদি বুটেবল সিডি তৈরী করতে চান তাহলে Bootable CD/DVD তে ক্লিক করুন। Choose Recorder থেকে আপনার সিডিরমটি সিলেক্ট করুন। এবং সিডি রমে একটি ব্লাংক সিডি প্রবেশ করাতে হবে।
৫। Recording Speed হতে যে কোন স্পীড সিলেক্ট করে Burn CD তে ক্লিক করুন। ৩/৪ মিনিট সময় নিবে। ব্যাস তৈরি হয়ে গেল Bootable CD
৬। আর যারা সিডি তৈরী করতে পারেন না। তাদের চিন্তিত হবার কিছুই নাই।
Click here to repair physical bad sectors on damaged drive
surface directly under windows (XP/Vista/7) এ ক্লিক করুন
৭। হার্ড ডিস্কটি সিলেক্ট করে Start Process এ ক্লিক করুন-
৮। একটি কালো স্কীন আসবে। সেখানে Enter Choice-এ (যেখানে Scan & Repair লেখা Option টি আছে)
সেখানে 1 দিয়ে এন্টার করুন। আর যদি এরুপ না দেখায় তাহলে Enter Choice-এ
(যেখানে Normal Scan (With/Without Repair লেখা Option টি আছে)
সেখানে 2 দিয়ে এন্টার করুন। নিম্নরুপ স্কীনের মত।
৯। ব্যাস কাজ শুরু হয়ে গেছে। স্কীনে কাজের বিভিন্ন ধাপ দেখতে থাকুন। সম্পূর্ণ কাজের ধারা শেষ হতে প্রায় ১/২ ঘন্টা সময় নিতে পারে। উদাহরনভাবে বলা যায় যে,আমার ১ টেরাবাইট হার্ডডিস্ক ব্যাড সেক্টর রিপেয়ার করতে প্রায় ৩.০০ ঘন্টা সময় নিয়ে ছিলো।
১০। এইভাবে কাজের প্রক্রিয়া যখন শেষ পর্যায়ে ১০০% দেখাবে তখন একটি Drive Map দেখাবে সেখানে যাবতীয় তথ্য থাকবে যেমন-
কতটি কতটি ডিটেক্ট/রিমুভ করতে পেরেছে, হার্ড ডিস্কে অন্য কোন সমস্যা অআছে কিনা ইত্যাদি। উক্ত স্কীন থেকে বাহির হওয়ার জন্য ESC কী প্রেস করুন।
১১। এবার উপভোগ করতে থাকুন ব্যাড সেক্টর মুক্ত একটি স্বাস্থ্য সম্পন্ন হার্ডডিস্ক। অবশ্য এই কাজটি করার ফলে আপনার
পিসিরও পূর্বের তুলনায় অনেক পারফরম্যান্স বৃদ্ধি পাবে।
আর যারা Bootable CD তৈরি করেছেন তাদের কাজও আমার উপরোক্ত আলোটনার অনুরুপ সম্পুর্ণ কার্বন কপি। এখানে প্রধান কাজটা হচ্ছে Bootable CD থেকে কাজটি করতে হলে আপনার Bios অপশন থেকে প্রথমে First বুট হিসাবে সিডি রমকে দেখাতে হবে। অতপর Bootable CD টি সিডি রমে প্রবেশ করিয়ে বুট অপশনে যখন দেখাবে Press Any key to Continue …………. তখন যে কোন কী প্রেস করে কাজের প্রক্রিয়া শুরু করুন। আশা করি সমস্যা হবার কথা নয়।
নির্দেশনা-
১। হার্ডডিস্ক পার্টিশন করলে কিন্তু পূনরায় ব্যাড সেক্টর ফিরে আসবে। আমার এই কথাতে হয়ত অনেকে প্রশ্ন করবেন তাহলে ব্যাড সেক্টর রিপেয়ারিং করে কি লাভ হল? হ্যা লাভ হয়েছে। এই সফটওয়্যারটি ব্যবহারে আপনার সমগ্র হার্ডডিস্ক ড্রাইভের যতগুলো ব্যাড সেক্টর ছড়ানো ছিল তা সাজিয়ে গুছিয়ে একটি নিদিষ্ট স্থানে নিয়ে গিয়ে ব্লক করে রাখবে। ফলে পিসিতে কাজ করতে গেলে হার্ডডিস্ক ক্রাশ করবে না, হার্ডডিস্কের RPM সঠিকভাবে কাজ করবে। এবং হার্ডডিস্কের অযথা জায়গা নষ্ট হওয়া থেকে সুরাক্ষা দিবে।
২। একটা কথা অবশ্যই মনে রাখা দরকার হার্ডডিস্ক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আপনার হার্ডডিস্ককে যেভাবে সেটাপ করে দেয়।তা পরবর্তীতে ব্যবহারের পর পূর্বের কার্যকারীতা কখনোই ফিরে পাবেন না। এখানে পৃথিবীর যতবড় ইউটিলিটি ব্যবহার করেন না কেন? কেননা, হার্ডডিস্কের ভিতর একটি ফার্মওয়্যার যুক্ত থাকে তার প্রধান কাজ হল- হার্ডডিস্কটি কতবার চালু হয়েছে, কত ঘন্টা চলেছে, বর্তমান অবস্থা কিরুপ ইত্যাদি যাবতীয় খবর রাখা। অবশ্য এই রকম সফটওয়্যারও পাওয়া যায় যেখানে হার্ডডিস্কের যাবতীয় তদারকি করে। ইনশাআল্লাহ্ আমি যদি এই রকম কোন সফটওয়্যার পাই তাহলে পরবর্তীতে পোষ্ট করবার ইচ্ছা আছে।
৩। আর আপনি যদি বিশেষ কারনে পার্টিশন করেই ফেলেন। তাহলে পূনরায় HDD Regenerator2011 সফটওয়্যারটি চালু করে নিলেই হবে।
৪। হার্ডডিস্ক সুস্থ রাখতে তো দোষ নেই। তাই হার্ডডিস্কটি সুস্থ রাখতে ও ব্যাডসেক্টর ব্লক করে রাখতে ও কার্যকারীতা ধরে রাখতে HDD Regenerator2011 টি অত্যন্ত কার্যকারী। আমি নিজে ব্যবহার করে এর ভাল ফল পাচ্ছি।
যারা এই সফট ওয়্যারটি নিয়ে কাজ করতে চান তারা আমার দেয়া এই লিংক হতে ডাউনলোড করুন-
আজ এই পর্যন্তই। অনেক কথা হল। ভাল লাগলে কমেন্ট করতে ভূলবেন না যেন। পরিশেষে সবার সুস্থতা কামনা করে শেষ করছি। আল্লাহ্ হাফেজ
হার্ডডিস্ক কম্পিউটারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। মূলত আমরা পিসিতে যা কিছু সংরক্ষন করি ও দেখি সেগুলো সবই হার্ডডিস্কে সেইভ হয়। ক্রয়কৃত নতুন হার্ডডিস্কে সেইরকম কোন গুরুতর সমস্যা দেখা দেয় না। কিন্তু সমস্যা হয় ৬ মাস বা ১ বছর ব্যবহারের মাথায়। আর সেই সমস্যাটি হল হার্ড ডিস্কে ব্যাড সেক্টর পড়া। এটি একটি মূখ্য সমস্যা।
ব্যাড সেক্টর কি?
ব্যাড সেকটর হলো কিছু মেমোরি নষ্ট হয়ে যাওয়া। অর্থাৎ হার্ডডিস্কের যেখানে ব্যাড সেকটর পড়ে,সেখানে কোনো তথ্য সংরক্ষিত হয় না। হার্ড ডিস্কের মেমোরির যে অংশটুকু দীর্ঘ সময় ধরে ফাঁকা বা অব্যবহৃত থাকে,সেখানে ব্যাড সেকটর পড়ে। উদাহরন স্বরুপ বলা যায়, আপনি বাজার থেকে একটি নতুন টেবিল ক্রয় করে আনলেন টেবিলের উপর কিছু রাখলেন না। কিন্তু আপরার অগোচরে কেউ একজন সেখানে কিছু রাখল। তাতে নিশ্চয় টেবিলের ফাকা জায়গা পূরন হল। তেমনি হার্ডডিস্কে ঐ ভাবেই ব্যাডসেক্টর পড়ে। মূলত ঘন ঘন বিদুৎ চলে যাওয়া, ইউপিএস ব্যবহার না করার কারনে কিংবা হার্ডডিস্ক ড্রাইভ গুলো ডিফ্রাগমেন্ট কিংবা SFC না করার ফলে ব্যাড সেক্টর পড়ে
প্রধানত হার্ডডিস্কে ব্যাড সেক্টর ব্যবহারকারীর সংখ্যাই বেশী হবে। আর হবেই না কেন? দেশের যে বিদ্যুৎতের পরিস্থিতি। হার্ডডিস্কে ব্যাড সেক্টর পড়ে তা আমরা শুনেছি ও শুনলাম। কিন্তু এই ব্যাড সেক্টর রিপেয়ার করা যায় তা বোধ হয় কম সংখ্যক ব্যক্তিই জানি। আসলে কথাটা অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, এমন কিছু আধুনিক সফটওয়্যার আছে যার দ্বারা হার্ডডিস্কের ব্যাড সেক্টর রিপেয়ার করা যায়। আমি নিজেও এই রকম বেশ কয়েকটি ফ্রী সফট পূর্বে ব্যবহার করেছি। কিন্তু ফলাফল সন্তোষজনক ছিলনা। যে গুলো ভাল সফটওয়্যার সেই গুলো অর্থ দিয়ে ক্রয় করতে হবে। কাজেই সুয়োগের অপেক্ষায় ছিলাম। মূলত রাজধানী ঢাকা শহর সহ অনেক বিভাগীয় শহরগুলোতে অনেক টেকনিশিয়ান বলে থাকেন, তারা হার্ডডিস্ক রিপেয়ার করে থাকেন। প্রতি হার্ডিডিস্ক রিপেয়ার সার্ভিস ফী ২৫০-৫০০৳ । এটা কতটুকু তারা সার্ভিস দিবেন বা কোন সফওয়্যার ব্যবহার করেন তা আমি নিজেও জানি না।
আমার অভিজ্ঞতায় বলছি- ১। রাজশাহীর নিউ মার্কেটে একাধিক কম্পিউটার সার্ভিস সেন্টার রয়েছে। লেখাপড়ার সূত্রে রাজশাহীতে আসা তাদের প্রত্যেকের সাথে কম বেশী আমার পরিচয় আছে। এদের মধ্য একটি সার্ভিসিং সেন্টার আছে যেখানে- প্রতিদিন প্রায় ২০-৩০ টি হার্ডডিস্কের ব্যাড সেক্টর রিপেয়ারের কাজ করা হয়। কাজের চাপ ও কম নয়। তাই আমি ভাবলাম আমার হার্ডডিস্কটিও রিপেয়ার করে নিই। আমার ব্যাড সেক্টর রিপেয়ারের প্রয়োজন ছিল না।
কেননা মাত্র ১০ মাস হল ৩৮,৮৫০ টাকাতে নতুন পিসি ক্রয় করলাম। সেখানে সিগেট কোম্পানীর ১ টেরাবাইটের হার্ড ডিস্ক নিয়েছিলাম মাত্র ৫,০০০ টাকায়। এখন অবশ্য মার্কেটে হার্ডডিস্কের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে- ৫০০ এমবির দাম প্রায় ৭,০০০৳।
(উল্লেখ্য- সিগেট হল বর্তমানে হার্ডডিস্ক প্রস্তুতকরনে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠান। বেশ কয়েক বছর পূর্বে বাজারে Maxtor,Quantum নামে যে হার্ডডিস্ক কোম্পানী ছিল তা সিগেট মালিকানা হিসাবে গ্রহন করে-তথ্যসূত্র PC World.com-03/12/2011) তবু ভাবলাম হার্ডডিস্ক রিপেয়ার করতে দেয়া যাক।
কাজের ফলাফল কতটুকু সত্য তা জানা যাবে। হার্ডডিস্ক তাদের কাছে প্রেরন করলে তারা প্রতিউত্তরে বললেন মামা ৩০ মিনিট পর এসে হার্ডডিস্ক নিয়ে যাবেন। ৩০ মিনিট পর হার্ডডিস্ক গ্রহন করলাম। অবশ্য তারা আমার কাছ থেকে কোন ফী নিল না, আমি দিতে চাইলাম তবুও তারা গ্রহন করলেন না। আমি প্রশ্ন রাখলে প্রতিত্তরে তারা বললেন, আপনি কম্পিউটার বিষয়ে অনেক কিছু জানেন মামা! তাছাড়া প্রতিনিয়তই আপনার সাথে আমাদের দেখা হয়। আরে বলতে গেলে আপনি তো আমাদের পরিবারের সদস্য। তাই নিতে লজ্জাবোধ লাগছে। এই দিকে আমার মনেও সন্দেহ থেকে গেল – কিভাবে ১ টেরাবাইটের হার্ডডিস্ক মাত্র ৩০. মিনিটের সময়ের ব্যবধানে রিপেয়ারিং সম্ভব। অবশ্য আমি কোনরুপ মন্তব্য করলাম না। এই দিকে হলে/ছাত্রাবাসে এসে আমার কালেক্ট করা HDD Re generator সফটটির সাহায্য পরীক্ষা করে দেখলাম কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাহলে ভাবুন একেত আমার হার্ডডিস্কের এই অবস্থা হয় তাহলে অপরজনের হার্ডডিস্কের অবস্থা কিরুপ হবে তা খোদা-তায়ালাই ভাল জানেন। ঐ ঘটনার দিন বিকালে যেখানে হার্ডডিস্ক ঠিক করতে দিয়েছিলাম সেখানকার এক মামার সাথে আমার ক্যাম্পাসে দেখা। তাকে সব কিছু বললে তিনি বললেন, মামা আসলে কি বলব আমাদের কাছে রিপেয়ার করার মত ঐ সফট নেই। এখন পাবলিক ছাড়ে না তাই বাধ্য হয়ে হার্ডডিস্ক পার্টিশন বা সেটাপ করে তাদের অনেককে বুঝিয়ে দেয়া হয় ব্যাড সেক্টর রিকভার করা হয়েছে। আসলে সবাই তো আর কম্পিউটার প্রযুক্তি বোঝে না……. ইত্যাদি। আমরা অবশ্য Norton Ghost দিয়ে কাজ করি। (উল্লখ্য এখানে Norton Ghost কোন ব্যাড সেক্টর রিপেয়ারিং সফট নয়, মূলত হার্ডডিস্কের পার্টিশেনর কাজ করতে এবং সংক্ষেপে এক হার্ডডিস্ক থেকে অন্য হার্ডডিস্ক ড্রাইভকে ক্লোন করে O/S ট্রান্সপার করা হয়। যা মাত্র ০৮/১০ মিনিটে কাজ করা সম্ভব।)
যাহোক, অনেক গল্প হল। এবার কাজের কথায় আসি। আমি কিছুক্ষন পূর্বে HDD Re generator নামে যে সফটওয়্যারটির কথা বললাম। এটিই হল সেই সফটওয়্যার যার সাহায্য ব্যাড সেক্টর রিপেয়ার করা সম্ভব। হার্ডডিস্ক ব্যাড সেক্টর রিপেয়ার করার মত যত সফটওয়্যার আছে । এটি জনপ্রিয়তার দিক খেকে সকলের শীর্ষ পর্যায়ে ও একটি বিশ্বস্ততম ইউটিলিটি সফট। সফট ওয়্যারটি ডাউনলোড করতে আমার দেওয়া লিংক অনুসরন করলেই চলবে।
১। সফট ওয়্যারটি ডাউনলোড করে যখন ইনষ্টল করবেন তখন ইনষ্টলের শেষ পর্যায়ে নিম্নোক্ত চিত্রনুয়ায়ী Launch the program থেকে টিক উঠিয়ে দিয়ে Finish করুন। ভূলেও প্রোগ্রামটি রান করবেন না।
২। এবার উক্ত ডাউনলোড করা ফাইল থেকে HDD Regenerator.exe এবং hddreg.exe ফাইল দুটি কপি করে C:\Program Files\HDD Regenerator
ফোল্ডারে copy & Paste করে Replace করুন
৩। এখন HDD Regenerator ফাইলটি রান করুন/চালু করুন। দেখা যাবে সফটওয়্যারটির রেজিষ্টার্ড ভার্সন হয়ে গেছে
৪। এবার কাজের পালা। আপনি যদি বুটেবল সিডি তৈরী করতে চান তাহলে Bootable CD/DVD তে ক্লিক করুন। Choose Recorder থেকে আপনার সিডিরমটি সিলেক্ট করুন। এবং সিডি রমে একটি ব্লাংক সিডি প্রবেশ করাতে হবে।
৫। Recording Speed হতে যে কোন স্পীড সিলেক্ট করে Burn CD তে ক্লিক করুন। ৩/৪ মিনিট সময় নিবে। ব্যাস তৈরি হয়ে গেল Bootable CD
৬। আর যারা সিডি তৈরী করতে পারেন না। তাদের চিন্তিত হবার কিছুই নাই।
Click here to repair physical bad sectors on damaged drive
surface directly under windows (XP/Vista/7) এ ক্লিক করুন
৭। হার্ড ডিস্কটি সিলেক্ট করে Start Process এ ক্লিক করুন-
৮। একটি কালো স্কীন আসবে। সেখানে Enter Choice-এ (যেখানে Scan & Repair লেখা Option টি আছে)
সেখানে 1 দিয়ে এন্টার করুন। আর যদি এরুপ না দেখায় তাহলে Enter Choice-এ
(যেখানে Normal Scan (With/Without Repair লেখা Option টি আছে)
সেখানে 2 দিয়ে এন্টার করুন। নিম্নরুপ স্কীনের মত।
৯। ব্যাস কাজ শুরু হয়ে গেছে। স্কীনে কাজের বিভিন্ন ধাপ দেখতে থাকুন। সম্পূর্ণ কাজের ধারা শেষ হতে প্রায় ১/২ ঘন্টা সময় নিতে পারে। উদাহরনভাবে বলা যায় যে,আমার ১ টেরাবাইট হার্ডডিস্ক ব্যাড সেক্টর রিপেয়ার করতে প্রায় ৩.০০ ঘন্টা সময় নিয়ে ছিলো।
১০। এইভাবে কাজের প্রক্রিয়া যখন শেষ পর্যায়ে ১০০% দেখাবে তখন একটি Drive Map দেখাবে সেখানে যাবতীয় তথ্য থাকবে যেমন-
কতটি কতটি ডিটেক্ট/রিমুভ করতে পেরেছে, হার্ড ডিস্কে অন্য কোন সমস্যা অআছে কিনা ইত্যাদি। উক্ত স্কীন থেকে বাহির হওয়ার জন্য ESC কী প্রেস করুন।
১১। এবার উপভোগ করতে থাকুন ব্যাড সেক্টর মুক্ত একটি স্বাস্থ্য সম্পন্ন হার্ডডিস্ক। অবশ্য এই কাজটি করার ফলে আপনার
পিসিরও পূর্বের তুলনায় অনেক পারফরম্যান্স বৃদ্ধি পাবে।
আর যারা Bootable CD তৈরি করেছেন তাদের কাজও আমার উপরোক্ত আলোটনার অনুরুপ সম্পুর্ণ কার্বন কপি। এখানে প্রধান কাজটা হচ্ছে Bootable CD থেকে কাজটি করতে হলে আপনার Bios অপশন থেকে প্রথমে First বুট হিসাবে সিডি রমকে দেখাতে হবে। অতপর Bootable CD টি সিডি রমে প্রবেশ করিয়ে বুট অপশনে যখন দেখাবে Press Any key to Continue …………. তখন যে কোন কী প্রেস করে কাজের প্রক্রিয়া শুরু করুন। আশা করি সমস্যা হবার কথা নয়।
নির্দেশনা-
১। হার্ডডিস্ক পার্টিশন করলে কিন্তু পূনরায় ব্যাড সেক্টর ফিরে আসবে। আমার এই কথাতে হয়ত অনেকে প্রশ্ন করবেন তাহলে ব্যাড সেক্টর রিপেয়ারিং করে কি লাভ হল? হ্যা লাভ হয়েছে। এই সফটওয়্যারটি ব্যবহারে আপনার সমগ্র হার্ডডিস্ক ড্রাইভের যতগুলো ব্যাড সেক্টর ছড়ানো ছিল তা সাজিয়ে গুছিয়ে একটি নিদিষ্ট স্থানে নিয়ে গিয়ে ব্লক করে রাখবে। ফলে পিসিতে কাজ করতে গেলে হার্ডডিস্ক ক্রাশ করবে না, হার্ডডিস্কের RPM সঠিকভাবে কাজ করবে। এবং হার্ডডিস্কের অযথা জায়গা নষ্ট হওয়া থেকে সুরাক্ষা দিবে।
২। একটা কথা অবশ্যই মনে রাখা দরকার হার্ডডিস্ক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আপনার হার্ডডিস্ককে যেভাবে সেটাপ করে দেয়।তা পরবর্তীতে ব্যবহারের পর পূর্বের কার্যকারীতা কখনোই ফিরে পাবেন না। এখানে পৃথিবীর যতবড় ইউটিলিটি ব্যবহার করেন না কেন? কেননা, হার্ডডিস্কের ভিতর একটি ফার্মওয়্যার যুক্ত থাকে তার প্রধান কাজ হল- হার্ডডিস্কটি কতবার চালু হয়েছে, কত ঘন্টা চলেছে, বর্তমান অবস্থা কিরুপ ইত্যাদি যাবতীয় খবর রাখা। অবশ্য এই রকম সফটওয়্যারও পাওয়া যায় যেখানে হার্ডডিস্কের যাবতীয় তদারকি করে। ইনশাআল্লাহ্ আমি যদি এই রকম কোন সফটওয়্যার পাই তাহলে পরবর্তীতে পোষ্ট করবার ইচ্ছা আছে।
৩। আর আপনি যদি বিশেষ কারনে পার্টিশন করেই ফেলেন। তাহলে পূনরায় HDD Regenerator2011 সফটওয়্যারটি চালু করে নিলেই হবে।
৪। হার্ডডিস্ক সুস্থ রাখতে তো দোষ নেই। তাই হার্ডডিস্কটি সুস্থ রাখতে ও ব্যাডসেক্টর ব্লক করে রাখতে ও কার্যকারীতা ধরে রাখতে HDD Regenerator2011 টি অত্যন্ত কার্যকারী। আমি নিজে ব্যবহার করে এর ভাল ফল পাচ্ছি।
যারা এই সফট ওয়্যারটি নিয়ে কাজ করতে চান তারা আমার দেয়া এই লিংক হতে ডাউনলোড করুন-
আজ এই পর্যন্তই। অনেক কথা হল। ভাল লাগলে কমেন্ট করতে ভূলবেন না যেন। পরিশেষে সবার সুস্থতা কামনা করে শেষ করছি। আল্লাহ্ হাফেজ
দারুন টিউটোরিয়াল । ভীষন দরকারী তথ্য, শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
ReplyDelete